নাইজেরিয়ার লাজুক হাতিদের পাশে  একদল তরুণ

মনুষ্য প্রজাতির চাপে বন্যপ্রাণীদের কোণঠাসা অবস্থা পুরো পৃথিবীব্যাপী। গাছের পাখি থেকে শুরু করে বনের হাতি কেউই স্বস্তিতে নেই এই দুই পেয়ে জীবের যন্ত্রণায়। নানামুখী সঙ্কটে প্রাণীকুলের যখন ত্রাহি অবস্থা তখন নাইজেরিয়ায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন একটা চিত্র। সেখানকার যুবক-যুবতীদের একটি দল দেশটির বিপন্ন-সন্ত্রস্ত হাতিদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ মাধ্যম এএফপির একটি প্রতিবেদন বলছে, নাইজেরিয়ার ওমো জঙ্গলের প্রাণ বৈচিত্র রক্ষায় দেশটির একদল যুবক-যুবতী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে। তারা বন্যপ্রাণীদের রক্ষায় বদ্ধপরিকর।

ধারণা করা হয়, দেশটির রাজধানী লাগোস থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই জঙ্গলে প্রায় ১০০ হাতির বাস। এদের মধ্যে সাভানা প্রজাতির হাতির চেয়ে অপেক্ষাকৃত লাজুক একটি প্রজাতি রয়েছে। প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য নিবেদিত ওই দলটি সে সব হাতিদের জীবন ঝুঁকিমুক্ত করার কাজ করছে।

পশুপ্রাণী ও জীববিজ্ঞান গবেষক জ্যো অ্যাডুসন বলেন, সে সব মানবাধিকার কর্মীরা একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তা হলো, হাতিরা মানুষকে ভয় পায়। এবং তারা পালিয়ে বেড়ায়। সে কারণে তাদের সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

ফরেস্ট এলিফ্যান্ট ইনিশিয়েটিভ নামক একটি বেসরকারি সংস্থার কো-অর্ডিনেটর ইমান্যুয়েল ওলাবডি যেমনটি বলছিলেন, জঙ্গলের গাছপালা উজাড় হয়ে যাওয়ায় তাদের বাসস্থান ধংস হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে তারা চলাফেরায় সাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না।তারা তাদের আদি বাসস্থান থেকে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হচ্ছে।  

নাইজেরিয়ার ওই এলাকার বেশিরভাগ জঙ্গল জাতিসংঘ পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক সংরক্ষিত। তারপরও স্থানীয় গ্রামবাসীদের বাণিজ্যিক কর্মকান্ডের বলি হচ্ছে সেগুলো।এখানকার অর্থনৈতিক কাঠামো এমন যে, তাদের কর্মকাণ্ড হাতির বেঁচে থাকার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও এ ছাড়া তাদের কাছেও বিকল্প কিছু নেই।

কৃষি শ্রমিক ক্রিস্টোফার সাদরাচের ভাষায়-আমি বেকার ছিলাম। তাই এই জঙ্গল এলাকায় থিতু হতে আসি। আমি জঙ্গলের একটি ছোটো অংশ পরিষ্কার করে সেখানে কোকোয়া গাছের চারা রোপন করি। যখন কোকোয়াগুলো বাড়তে শুরু করলো আমি সেগুলোতে নিয়মিত পানি দেয়া শুরু করি। এবং যত্ন-আত্তি করি। একসময় সেগুলো পরিপূর্ণ হলো এবং সেগুলো কেটে আমি বিক্রি করি। এখানে একমাত্র কোকোয়াই ফলে। এবং আমি সেগুলো দিয়েই আমার পরিবারকে আগলে রাখি।

এখন বন সংরক্ষণকারীদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো এইসব গ্রামবাসী এবং বন্যপ্রাণীকর্মীদের মধ্যে এক ধরণের ভারসাম্য রক্ষা করা। কেননা উভয় শ্রেণিই বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। কেউ প্রত্যক্ষ আবার কেউ পরোক্ষ তথা জীব-জন্তুর হয়ে। এই ভারসাম্য রক্ষার যুদ্ধে তারা কতটুকু সক্ষম হন তার উপর নির্ভর করছে নাইজেরিয়ার এসব হাতিদের বেঁচে থাকা।

 

টাইমস/এমএস

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সাহসী মন্তব্যে ফের বিতর্কে রাশমিকা মান্দানা Nov 07, 2025
img
রাম চরণ-জাহ্নবী কাপুরের ‘চিকিরি’ গানে মুগ্ধ দর্শক Nov 07, 2025
img
জাহানারা চাইলে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেবে: ক্রীড়া উপদেষ্টা Nov 07, 2025
img
‘নো হাংকি পাংকি’ কোনো রাজনৈতিক দলের ভাষা হতে পারে না : এ্যানি Nov 07, 2025
img
আল্লু অর্জুনকে নিয়ে ফিরছে ‘সরাইনোডু’-এর সিক্যুয়েল Nov 07, 2025
img
সালমান খানের বিজ্ঞাপন নিয়ে আইনি বির্তক Nov 07, 2025
img
বিচ্ছেদের পথে নীল-ঐশ্বরিয়া Nov 07, 2025
img
রাজধানীতে আ. লীগের ৬ নেতাকর্মী আটক Nov 07, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে হাজারো ফ্লাইট বন্ধ করে দিচ্ছে বিমানবন্দরগুলো Nov 07, 2025
img
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেবল দাস তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম Nov 07, 2025
img
জাহানারার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তামিম ইকবালের ফেসবুক পোস্ট Nov 07, 2025
img
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিশ্চিত করেছিলেন : দুলু Nov 07, 2025
img
রোনালদোর সমালোচনার জবাবে মুখ খুললেন ইউনাইটেড কোচ Nov 07, 2025
img
পরকীয়া নিয়ে মন্তব্য করলেন অক্ষয়ের স্ত্রী টুইঙ্কেল, আলোচনায় অভিনেতার অতীত Nov 07, 2025
img
মোহামেডান ও আবাহনীর পর ফের কিংসের ওপর ফিফা নিষেধাজ্ঞা Nov 07, 2025
img
ভাঙার নয়, গড়ার মন্ত্র দিলেন অমিতাভ বচ্চন! Nov 07, 2025
img
কোহলিকে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার বললেন স্টিভ ওয়াহ Nov 07, 2025
img
পোশাক নিয়ে মন্তব্যের জেরে বিতর্কে পাকিস্তানি টিকটকার Nov 07, 2025
মেধা মূল্যায়ন পরীক্ষা পরিদর্শনে ডাকসু ভিপি Nov 07, 2025
‘আমি ই/রা/নে হা/ম/লা/র মূল পরিকল্পনাকারী ছিলাম’ Nov 07, 2025