জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নতুন করে এক-এগারোর আশঙ্কা প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, আরেকটি এক-এগারো সৃষ্টি হলে এর দায় নতুন দল (এনসিপি) ও তাদের সহযোগীদের। তারাই মব জাস্টিসের নামে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য করেছে।
শনিবার (২৪ মে) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার শকুয়াই ইউনিয়নের ভাট্টা বাজারে শকুয়াই ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, নির্বাচন নিয়ে কথা বললেই নতুন দলসহ বিতর্কিত আরও দুয়েকটি দলের এবং কয়েকজন উপদেষ্টার শরীরে মনে হয় ফোসকা পরে। যারা বলে বিএনপি শুধু নির্বাচনের কথা বলে, তাদেরকে বলতে চাই, প্রজাতন্ত্রে মালিক জনগণ। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া দেশ চলতে পারে না। গণতন্ত্রও ফিরে আসবে না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল নির্বাচন চাইবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নির্বাচন চাইলেই যদি পদত্যাগের কথা বলে ‘ইমোশনাল সিন’ সৃষ্টি করা হয়, তা শুধু দুর্ভাগ্যজনকই নয়, বেকায়দা পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী মহলকে আড়াল ও প্রশ্রয় দেওয়ারও শামিল।
বিএনপি শুধু নির্বাচনের দাবিই করে নাই, রাষ্ট্র সংস্কার ও ফ্যাসিস্টের বিচারের কথাও বলছে উল্লেখ করে বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের কথা শুনলে যারা বিচলিত হন তারা বিভিন্নভাবে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আপনারা কেন গত ৯ মাসে সংস্কার ও বিচার ত্বরান্বিত করলেন না? এসব মহল নির্বাচনকে প্রলিম্বিত করে নির্বাচন ছাড়াই দীর্ঘদিন ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায়। বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে তারা সরকারকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
প্রিন্স আরও বলেন, সরকারের ভেতর ও বাইরে থাকা স্বার্থান্বেষী মহল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুলেছে। কারা সরকারকে বিপাকে ফেলেছে প্রধান উপদেষ্টাকে নির্মোহভাবে তা দ্রুত উদঘাটন করে সংকট নিরসন করতে হবে। সংকট মোকাবেলায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন নিয়ে গত ৯ মাসে সরকারের অগ্রগতি কী, কেন ধীর গতি, কেন বিলম্ব এবং রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ নতুন দলের প্রতি কেন প্রচ্ছন্ন সমর্থন, তাও নির্মোহভাবে সরকারের বলা উচিত। আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে নাই। সংস্কার ও বিচার শুরু করতে যৌক্তিক সময় দিতে চেয়েছে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ৯ মাস পার হয়ে গেলেও নির্বাচন, সংস্কার ও বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি নাই। যৌক্তিক সময় নিশ্চই অনন্তকাল হতে পারে না। নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতিতে দেশে অস্থিরতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকারের কতিপয় উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট মহলের এখতিয়ার বহির্ভূত কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যও পরিস্থিতিকে অসহনশীল করে তুলেছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুলের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আবু হাসনাত বদরুল কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল হাই, আলী আশরাফ, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, মিজানুর রহমান মিজান, শফিকুর রহমান, মোনায়েম হোসেন খান খোকন, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আলমগীর আলম বিপ্লব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরএম/এসএন