চিকিৎসার কাজে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সুচ ফুটিয়ে রক্ত টানতে হয় চিকিৎসকদের। এই সুচ ফোটানোর বিষয়টি অনেকেই ভয় পান।
সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে সুচবিহীন রক্ত পরীক্ষার আধুনিক পদ্ধতি নিয়ে আসা হয়েছে। এর নাম ‘ফোটোপ্লেথিসমোগ্রাফি’ (পিপিজি)।
এই প্রযুক্তিতে রক্ত পরীক্ষা করার জন্য শরীর থেকে এক ফোঁটাও রক্ত নেওয়া হবে না। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। হায়দরাবাদের একটি হাসপাতালে এমন অভিনব পদ্ধতিতে রক্ত পরীক্ষা চলছে।
ফোটোপ্লেথিসমোগ্রাফি (পিপিজি) একটি ‘ফেস স্ক্রিনিং টেকনোলজি’ প্রযুক্তি, যা মুখের স্ক্যান করেই শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং শরীরে কোনো রোগ আছে কিনা তা ধরা যাবে।
পিপিজি প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে
প্রথমে পিপিজিতে একটি যন্ত্রের সামনে বসতে হবে। সেটি ২০ থেকে ৬০ সেকেন্ড ধরে মুখের স্ক্যান করবে। স্ক্যানের পদ্ধতি মোবাইল বা কোনো ডিভাইস দিয়েও হবে। যন্ত্রটির সঙ্গে একটি অ্যাপের সংযোগ থাকবে। সেখানে পরীক্ষার ফলাফল দেখা যাবে।
কুইক ভাইটাল নামে একটি সংস্থা রক্ত পরীক্ষার এই নতুন পদ্ধতি নিয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রকল্প অম্রুত স্বাস্থ্য ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে একটি স্ক্রিনিং পদ্ধতি নিয়ে আসা হয়েছে, যা শরীরের স্ক্যান করেই বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবে। স্ক্যান করার সময়ে শরীরের কোন অংশে আলোর প্রতিফলন কেমন হচ্ছে, তা নির্ধারণ করার জন্য একটি সেন্সর থাকবে। সেটিই গ্রাফ বা ডেটার আকারে তথ্য দেবে।
পিপিজি কোন কোন রোগের তথ্য দেবে?
হার্টের রোগ রয়েছে কি না, তা ধরা পড়তে পারে স্ক্যানে, রক্তচাপ পরিমাপ করা যাবে, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কতটা, তার তথ্য পাওয়া যাবে, হার্ট রেট বা হৃদ্স্পন্দনের হার পরিমাপ করতে পারবে, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার পরিমাপ করে ফুসফুসে কোনো রোগ রয়েছে কি-না, সে তথ্য জানা যাবে, শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কত সে তথ্য দেবে, মানসিক চাপ বা উদ্বেগ রয়েছে কি না, সে তথ্যও পাওয়া যাবে এবং সিম্প্যাথেটিক ও প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুর কার্যকারিতা সম্পর্কেও তথ্য দেবে ফোটোপ্লেথিসমোগ্রাফি (পিপিজি) প্রযুক্তি।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও শিশুদের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ে বড় ভূমিকা নিতে পারে এ প্রযুক্তি। এই পদ্ধতি নিরাপদ, এতে সংক্রমণের ভয় নেই। কাজেই কোনো জটিল রোগের চিকিৎসা চলার সময়ে রক্তচাপ, হৃদ্স্পন্দনের হার বা নাড়ির গতি জানতেও এই এআই নির্ভর স্ক্রিনিং পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরআর/এসএন