পৃথিবীর পাশে দিয়ে গেল ৩৩৫ মিটার আয়তনের গ্রহাণু, ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা

পৃথিবীর কাছাকাছি দিয়ে আবারও ছুটে গেল এক বিশাল আকারের গ্রহাণু। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ‘২০০৩ এমএইচ৪’ নামের এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর একেবারে নিকটবর্তী কক্ষপথ অতিক্রম করেছে গত শনিবার (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা ৩৭ মিনিটে)।

গ্রহাণুটির আয়তন ছিল প্রায় ৩৩৫ মিটার, যা ফ্রান্সের বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারের উচ্চতার কাছাকাছি। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) থেকে জানানো হয়, গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৬৬ লাখ ৮০ হাজার মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করেছে। এই দূরত্বে আসার সময় তার গতি ছিল ঘন্টায় প্রায় ৩০ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি।

‘২০০৩ এমএইচ৪’ গ্রহাণুটি অ্যাপোলো পরিবারের সদস্য। এই পরিবারের গ্রহাণুগুলো পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে সংযোগ স্থাপন করে অতিক্রম করে যায় এবং তাই এগুলোকে সম্ভাব্য বিপজ্জনক বলে বিবেচনা করা হয়।

নাসার সেন্টার ফর নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজ জানিয়েছে, এই গ্রহাণুটি সরাসরি হুমকি না হয়ে থাকলেও সতর্কতা হিসেবে একে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিতে ফেলা হয়েছিল। সাধারণত ১৪০ মিটার বা তার বেশি আয়তনের গ্রহাণু যদি পৃথিবীর ৭৫ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসে, তবে সেটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট গ্রহাণু সাধারণত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলেই মেসোস্ফিয়ার স্তরে ঘর্ষণে পুড়ে যায় এবং মাটিতে পৌঁছায় না। কিন্তু বড় আকারের গ্রহাণু, বিশেষ করে যেগুলোর ব্যাস ৯০ মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত, যদি পৃথিবীতে আঘাত হানে, তবে তা ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারে—শহর নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে, পরিবর্তন ঘটতে পারে জলবায়ুরও।

বিজ্ঞানীদের মতে, ২০০৩ এমএইচ৪ এই মুহূর্তে সরাসরি বিপদের কারণ না হলেও এর মতো অন্যান্য গ্রহাণুর গতিপথ নজরদারির বাইরে রাখলে ভবিষ্যতে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এজন্যই নাসা নিয়মিতভাবে কাছাকাছি আসা সকল মহাজাগতিক বস্তুর উপর নজরদারি জোরদার করছে। পৃথিবীর রক্ষাকবচরূপে মহাকাশ পর্যবেক্ষণকারী এই গবেষণা অব্যাহত রাখা জরুরি বলেও মত দিয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।

এফপি


Share this news on:

সর্বশেষ

img
যতদিন দরকার, ততদিন আক্রমণ অব্যাহত রাখা হবে: নেতানিয়াহু Jun 13, 2025
img
টিউলিপ ব্রিটেনের রাজনীতিতে কতটা প্রভাবশালী, টের পেলেন ড. ইউনূস : গোলাম মাওলা রনি Jun 13, 2025
শাহরুখপুত্র আরিয়ানকে নিয়ে সাজালের স্টোরি! Jun 13, 2025
"তীব্র রোদে ঠান্ডা ভালোবাসা-ঢাকায় নবী মিয়ার রোজগারের গল্প" Jun 13, 2025
লন্ডন সফরে টিউলিপের অনুরোধে সাড়া দিলেন না ড. ইউনূস Jun 13, 2025
img
ত্রিবিক্রমের নতুন কাহিনিতে দেবতার রূপে এবার এনটিআর Jun 13, 2025
img
হোটেল ডরচেস্টারে পৌঁছেছেন তারেক রহমান, কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু বৈঠক Jun 13, 2025
ইউনূসের সাথে সাক্ষাতে উচ্ছ্বসিত ক্যাথরিন ওয়েস্ট Jun 13, 2025
img
প্যারিসে স্বপ্নের মতো সময় কাটাচ্ছেন মেহজাবীন ও রাজীব Jun 13, 2025
img
‘থাগ লাইফ’-এ তৃষার চরিত্র ঘিরে অভিযোগ তুলেছে দর্শকরা Jun 13, 2025
img
ফরিদপুরে গ্রেফতার আ.লীগ ও কৃষক লীগের দুই নেতা Jun 13, 2025
img
আল্লু অর্জুনকে নিয়ে এটলির নতুন ছবি, নায়ক-খলনায়ক দুই চরিত্রেই থাকছেন তিনি Jun 13, 2025
img
মুম্বাই টি-টোয়েন্টি লিগের ফাইনালেও হারলেন শ্রেয়াস আইয়ার Jun 13, 2025
img
বাংলাদেশ সফরে আসছেন না বাবর-রিজওয়ান-শাহীন! Jun 13, 2025
img
এবার থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণ করল এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট Jun 13, 2025
img
সন্তান জন্মের পর থেকে ‘ভালো’ বাবা ও স্বামী হয়ে ওঠেন বুমরাহ Jun 13, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন তারেক রহমান Jun 13, 2025
img
গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানোর চেষ্টা চলছে : জ্বালানি উপদেষ্টা Jun 13, 2025
img
"এই ফ্লাইট কি নিরাপদ?"—ভিডিওর ঘণ্টা পেরোতেই দুর্ঘটনায় বোয়িং ৭৮৭ Jun 13, 2025
img
বাজারে বেড়েছে সবজির দাম, মুরগির দামে ফিরেছে স্বস্তি Jun 13, 2025