সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশে চীনা সামরিক উপস্থিতির সম্ভাবনার কথা এসেছে। অবশ্য মার্কিন প্রতিবেদন নাকচ করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘এটি সত্য নয়’।
বুধবার (২৮ মে) চীনে প্রথমবারের মতো আমের চালান পাঠানো নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এমন দাবি করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশে চীনা সামরিক উপস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদন নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি একটি প্রতিবেদন, যা সত্য নয়। আমাদের এ ধরনের কোনো উদ্দেশ্য নেই। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা আমাদের বন্ধুত্বের ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, চীনের সামরিক উপস্থিতি থাকার কোনো প্রয়োজন আমি দেখি না। আর এটার জন্য আমাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। আমি জানি না এ প্রতিবেদনের উৎস কী। তবে আমি বলতে চাই, এটি সত্য নয়।
মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ) কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে সামরিক উপস্থিতি বিবেচনা করছে চীন। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছাড়াও মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সেশেলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও তাজিকিস্তানের নাম এসেছে।
চীনা বাণিজ্যমন্ত্রীর সফরে কিছু এমওইউ হবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
আগামী ৩১ মে ঢাকায় আসছেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাওয়ে। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রীর সফরে দেশটির সঙ্গে কিছু সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর আগামী সপ্তাহে চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী একটি বৃহত্তর বিনিয়োগ প্রতিনিধি নিয়ে আগামী শনিবার বাংলাদেশ সফর করছেন। তিনি দুই দিন ঢাকায় অবস্থান করবেন। তারা বিনিয়োগ বিশ্লেষণ করবেন, জানবেন, বিডার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমার সঙ্গেও চীনা বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক হবে। আমরা কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করব।
শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসার সঙ্গে চীনার ব্যবসার একটা সংযোগ সৃষ্টি হবে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারনের উদ্দেশ্যে, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্দেশ্যে আমরা বেশ কিছু বিষয় চিহ্নিত করেছি, যার ওপর ভিত্তি করে আমরা এমওইউ স্বাক্ষর করব।
চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর সফরে দেশটির পক্ষ থেকে কি পরিমাণ বিনিয়োগের আশা করছেন, এমন প্রশ্নে উপদেষ্টার ভাষ্য, চীন কত বিনিয়োগ করবে সেটা এ মুহূর্তে বলা মুশকিল। কারণ সিদ্ধান্তটা তারা নেবে। তবে আমরা আশা করি চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী একজন খবুই সিনিয়র মানুষ, একটা প্রতিনিধি দল নিয়ে আসছেন। আশা করি তাদের এই সফর বিফলে যাবে না।
গত মার্চে চীন সফর করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস। তার সফরের পর দেশটি থেকে কী পরিমাণ বিনিয়োগ এসেছে, জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, আপনি যখন কোনো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন তখন তা এক সপ্তাহে ঘটে না।
চলতি বছরে আম রপ্তানির পরিমাণ ১০ গুণ বাড়বে বলে মনে করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ এখন চীনের বাজারে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। এই সুবিধার আওতায় এবারই প্রথম দেশটিতে বিনা শুল্কে বাংলাদেশের আম রপ্তানি করা হচ্ছে। আম রপ্তানি বহুগুণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এতে করে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাবেন।
চীনে বাংলাদেশের আম রপ্তানি নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনের বাজারে বাংলাদেশের আম রপ্তানিতে উভয় দেশ লাভবান হবে। এর মধ্যে দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আসবে।
চলতি বছর চীনে ৫০ টন আম রপ্তানির কথা রয়েছে। আজ প্রথম চালানে চীনে রপ্তানি শুরু হলো। অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
এফপি/ এসএন