আইপিএলের মেগা নিলামে রীতিমতো হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। তার সেই রেকর্ড বেশিক্ষণ টেকেনি। কারণ আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৭ কোটি রুপিতে (৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা) লখনৌ সুপার জায়ান্টস কিনে নেয় ঋষভ পান্তকে। কিন্তু আসরজুড়ে সেভাবে কার্যকরী কিছু করতে পারেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। গত ১২ ইনিংসে ১৫১ রান করা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার গতকাল (মঙ্গলবার) আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে ১১৮ রানের ইনিংস খেলেন।
১৪ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ব্যাট করে ২৬৯ রান করেছেন পান্ত। শেষ ম্যাচটা বাদ দিলে তার রানের গ্রাফটা হতো আরও বিতিকিচ্ছিরি। আগেই আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত করেছিল লখনৌ। গতকাল ছিল তাদের শেষ ম্যাচ। যেখানে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৬১ বলে ১১৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন পান্ত। নইলে আরও মুখ পোড়া যেত আইপিএলের সবচেয়ে দামী এই ক্রিকেটারের।
আইপিএলে পান্তকে কিনতে খরচ করা ৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকার হিসাব আমলে নিলে, পান্তের প্রতিটি রানের মূল্য দাঁড়ায় ১৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। অধিনায়কের এমন ব্যর্থতায় লখনৌ–ও লিগপর্ব শেষেই আসর থেকে বিদায় নিয়েছে। ২৬৯ রান নিয়ে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত আছেন রানসংগ্রাহকদের তালিকায় ৩৫ নম্বরে। আর লখনৌ’র ব্যাটারদের মধ্যে তার অবস্থান পাঁচে। এই অবস্থা দেখে হয়তো ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকা সঞ্জীব গোয়েনকা তার বলা কথা ফিরিয়ে নেবেন।
এর আগে ২৭ কোটি রুপিতে পান্তকে কেনার পরে লখনৌর এই কর্ণধার বলেছিলেন, ‘দিল্লি ক্যাপিটালস পান্তকে রাখবে না জানার পরই আমরা তাকে নিয়ে দল সাজানোর পরিকল্পনা করেছিলাম। আমার বিশ্বাস, পান্ত দারুণ নেতা। ওর সেরা নেতৃত্ব এখনও দেখতে পাইনি। আমরা ২৭ কোটিতে ওকে পেয়েছিলাম। দরকার হলে ২৮ কোটিও খরচ করতাম!’ এখন নিজেদের আইপিএল দৌড় শেষ হওয়ার পর লখনৌ মালিক গোয়েনকা হয়তো কিছুটা হাঁফ ছেড়েছেন এই বলে– যাক অন্তত এক কোটি তো বাঁচল!
আসরজুড়ে ভালো করতে না পারার চিত্র পান্তের কালকের ম্যাচের উদযাপনে দেখা যায়নি। সেঞ্চুরি করার পর গ্লাভস ও হেলমেট খুলে শূন্যে ‘ডিগবাজি’ দিলেন একপাক। এরপর দু’দিকে দু’হাত ডানার মতো ছড়িয়ে আকাশের দিকে তাকালেন। মুখে তৃপ্তির হাসি। চাপমুক্ত দেখাচ্ছিল তাকে। টেলিভিশন স্ক্রিনে ভেসে উঠল লখনৌ’র ভিআইপি বক্স। কিন্তু সেখানে দেখা গেল না গোয়েনকাকে। অথচ এই ইনিংস দেখার অপেক্ষাতেই তিনি থেকেছেন গোটা আইপিএল। কিন্তু শেষবেলায় নিয়মরক্ষার ম্যাচ দেখতে আর লখনৌর মালিক হাজির হননি। ম্যাচের পরে অবশ্য সামাজিকমাধ্যমে একটি শব্দ লিখেছেন গোয়েনকা, ‘প্যান্টাস্টিক’!
বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামার আগপর্যন্ত ১৩টি ম্যাচে পান্ত করেছিলেন মোট ১৫১ রান। তার মধ্যে সাতবার তিনি দুই অঙ্কেও পৌঁছাতে পারেননি। ব্যাট করতে নেমে দ্বিধায় ভুগেছেন। শট নির্বাচন করতে পারেননি। বলের লাইনে গিয়ে খেলতে পারেননি। সাধারণ ডেলিভারিতে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন। উইকেটরক্ষক হিসেবেও ছিলেন ব্যর্থ। ক্যাচ ফেলেছেন। সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগও হাতছাড়া করেছেন। ধরেছেন পাঁচটি ক্যাচ, স্টাম্প আউট করেছেন একটি। পান্তকে দেখে মনে হয়েছে, আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগেছেন।
এমআর