চিকিৎসক সংকট দূর করতে সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যেই বড় পরিসরে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রকাশ হতে পারে ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সূত্রে জানা গেছে, সার্কুলার প্রকাশের যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, এখন কেবল চেয়ারম্যানের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই তা প্রকাশ করা হবে।
এ বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে ৩ হাজার চিকিৎসক। এর মধ্যে ২ হাজার ৭০০ জন সহকারী সার্জন এবং ৩০০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে নিযুক্ত হবেন বলে জানিয়েছে সূত্র।
পিএসসির পরীক্ষা (ক্যাডার) শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আজই এটি প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষ বিসিএসের আওতায় এ নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া হবে তুলনামূলক সরল ও দ্রুত। কোনো লিখিত পরীক্ষা থাকছে না। পরীক্ষার্থীদের ২০০ নম্বরের বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরই শুধু ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে।
পিএসসি সূত্র বলছে, পরীক্ষা সংক্রান্ত সময় ও কাঠামো নির্ধারণ করে ইতোমধ্যেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এমসিকিউ পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই ঘণ্টা। প্রশ্নপত্রে থাকবে বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি—এই ছয়টি বিষয়ের ওপর মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন।
বাকি ১০০ নম্বর থাকবে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার বা পদের প্রাসঙ্গিক বিষয়ের ওপর। চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে এই অংশটিতে মেডিকেল সায়েন্স থেকে প্রশ্ন করা হবে। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর দেওয়া হবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০ দশমিক ৫০ নম্বর।
সূত্র বলছে, লিখিত পরীক্ষা না থাকায় এবং মৌখিক পরীক্ষায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা থাকায় এ বছরের মধ্যেই বিশেষ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ সম্ভব হবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই নিয়োগের সুপারিশ পাঠানো হতে পারে।
মূলত, সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকট দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে উপজেলা ও গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে পদ শূন্যতার কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতেই দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পিএসসি জানিয়েছে, এটি একটি বিশেষ বিসিএস হওয়ায় শুধু চিকিৎসকদের জন্যই আয়োজন করা হয়েছে। সাধারণ বিসিএসের অন্যান্য ক্যাডারে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রযোজ্য নয়।
এদিকে, বিসিএসের নিয়মিত প্রার্থীরা বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন কি না, তা বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। তবে পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, সরকারি বা স্বীকৃত মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা এবং পেশাগত নথিপত্র সম্পূর্ণ থাকলেই আবেদনের সুযোগ থাকবে।
আরএ/টিএ