যে ছবিটি শুরু হয়েছিল এক স্বপ্নের জুটি হিসেবে — দীপিকা পাড়ুকোন ও সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ‘স্পিরিট’ — এখন তা পরিণত হয়েছে বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত দ্বন্দ্বে। এই গল্পে শুধু কাস্টিং বদল নয়, উঠে এসেছে সংঘর্ষ, প্রচারের রাজনীতি এবং তার পাশে নিঃশব্দে ক্ষতিগ্রস্ত একজন অভিনেত্রীর কথা, যার কোনও দোষ নেই, তবুও তাকেই দোষারোপের কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে।
পরিচালক সন্দীপ ভাঙ্গা প্রথম থেকেই দীপিকাকেই এই ছবির নায়িকা হিসেবে ভাবেন। দু’বার তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, এবং ভাঙ্গা নিজেই জানান দীপিকা তার “প্রথম ও একমাত্র পছন্দ”। প্রথমবার দীপিকা গর্ভবতী থাকার কারণে কাজটি ফিরিয়ে দেন। পরে আবার আলোচনায় আসেন, এমনকি প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু হয়। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দীপিকা ছবিটি ছেড়ে দেন।
পরবর্তীতে যে কিছু দাবিদাওয়া সামনে আসে, তা বেশ চাঞ্চল্য তৈরি করে। পারিশ্রমিক হিসেবে ২৫ কোটি টাকা, লাভের অংশীদারিত্ব, দিনে মাত্র ছয় ঘণ্টা কাজ, তেলুগু ডাবিং না করা এবং ২৪ জনের নিজস্ব টিম — এই সবকটি শর্ত একসাথে মানা পরিচালকের পক্ষে সম্ভব হয়নি বলেই জানা যায়। বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতারা নানা শর্ত রাখেন, কিন্তু এমন বহুমুখী দাবি পরিচালনাগত দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করে।
শেষপর্যন্ত দীপিকা প্রজেক্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় তার জায়গায় নেওয়া হয় তরুণ এবং প্রতিভাবান অভিনেত্রী তৃপ্তি দিমরিকে। কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন এক সংকট। দীপিকার পিআর নেটওয়ার্ক ও অনুরাগীদের একাংশ তৃপ্তিকে ঘিরে নেতিবাচক প্রচার শুরু করে। ট্রোল, ব্যঙ্গ এবং অবমূল্যায়নের মাঝখানে পড়ে তৃপ্তি এমন একটি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, যার সঙ্গে তার ব্যক্তিগতভাবে কোনও সম্পর্ক নেই।
অনেক ফ্যানই এই পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেউ বলেন, “তৃপ্তি তো কিছুই করেনি, তাহলে কেন তাকে নিশানা করা হচ্ছে?” আবার কেউ বলেন, “এই ছবি দীপিকার ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, অভিনয় দিয়েই বিচার হওয়া উচিত।”
পরিচালক ভাঙ্গা নিজেও এই বিতর্ক নিয়ে বিরক্ত। তার বক্তব্য, “ড্রামা নয়, সিনেমার দিকে মন দিন।” তার মতে, প্রভাসের জনপ্রিয়তা, নিজের আবেগপ্রবণ কাহিনি বলার ধরন এবং তৃপ্তির নতুন মুখ হিসেবে থাকা — এই তিনটি দিক ছবিকে নতুন করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এই কাস্টিং বদল নিছক একটি প্রজেক্টের পরিবর্তন নয়, বরং বলিউডের পিআর ও প্রচার-নিয়ন্ত্রিত বাস্তবতাকে উন্মোচিত করেছে।
এসএম/টিএ