সাতক্ষীরায় খামারিদের উদ্বেগ, চাহিদার তুলনায় বেশি পশু

কোরবানির ঈদ নিকটে আসায় সাতক্ষীরার পশুর খামারগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত গরুর গোসল, খাবার প্রস্তুতি ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারিরা। তবে এবার পশুর সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় অনেক খামারি প্রত্যাশিত মুনাফা নিয়ে চিন্তিত। পাশাপাশি ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশের শঙ্কাও রয়েছে তাদের মধ্যে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, এবারের ঈদুল আজহায় সাতক্ষীরায় কোরবানির পশুর চাহিদা প্রায় ৮৫ হাজার ৩১৮টি। কিন্তু প্রস্তুত রয়েছে মোট ১ লাখ ৬০৬টি পশু, যার মধ্যে ৪৯ হাজার ১৯৯ গরু, ১ হাজার ১৮২ মহিষ, ৪৪ হাজার ৫৪ ছাগল, ৬ হাজার ১৫৬ ভেড়া ও অন্যান্য ১০টি পশু রয়েছে।

মাছখোলা গ্রামের খামারি আব্দুল আজিজ জানান, মাত্র ছয় মাস আগে খামার শুরু করেছি। এখন আমার খামারে ১০টি গরু রয়েছে। নিজ বাড়িতে লাগানো ঘাস খাইয়ে ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পালন করছি। যদি ভারত থেকে গরু না আসে, তাহলে আমরা প্রান্তিক খামারিরাও ভালো লাভ করতে পারব।

খামারি ইনজামুল হক বলেন, আমার খামারে প্রতিদিন সকাল বেলা গরুদের গোসল করিয়ে পরিচর্যা করি। এরপর খাবার দেওয়া হয় পর্যায়ক্রমে। সবসময়ই স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে খেয়াল রাখি।

তিন বছর ধরে গরু পালন করছেন খামারি হাফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এবার খাবারের দাম অনেক বেশি, কিন্তু বাজারে গরুর দাম কম। লাখ টাকার ওপরে গরু বিক্রি হচ্ছে না। লোকসানের শঙ্কা রয়েছে। তবে বড় গরুগুলো বিক্রি হলে হয়তো কিছু লাভ হতে পারে।

এবার উৎপাদন বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে পশুর দাম কিছুটা সহনীয় থাকবে বলে ধারণা খামারিদের।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) ডা. বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বলেন, চাহিদার তুলনায় এবার প্রায় ১৫ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। ভারতীয় গরু যাতে না আসে, সেজন্য সরকার কড়া অবস্থানে রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তিনি জানান, জেলার ১২ হাজার ৮৯৪টি খামারে পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার পশুর সংখ্যা বেড়েছে ২ থেকে ৩ শতাংশ। তার মতে, চোরাই পথে সীমিতসংখ্যক গরু এলেও তাতে প্রান্তিক খামারিদের তেমন প্রভাব পড়বে না।

অন্যদিকে, সাতক্ষীরার বাজারে এখন পশু খাদ্য ও পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তবুও আশাবাদী তারা যদি বাজারে ভারতীয় গরু না আসে, তাহলে লোকসানের আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমবে।

আরএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
লায়ন এখন শেরপুরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ Jun 03, 2025
img
পর্যাপ্ত পশু মজুদ রয়েছে, পার্শ্ববর্তী দেশের গরুর কোনো প্রয়োজন নেই : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Jun 03, 2025
শি জিনপিংয়ের মেয়েকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করবেন ট্রাম্প? Jun 03, 2025
ড. ইউনূস কে পরিষ্কার হওয়ার আহ্বান বিএনপির আজাদের Jun 03, 2025
শুধুমাত্র উট দেখার জন্য খিলগাঁও থেকে এসেছি Jun 03, 2025
img
হজযাত্রীদের বাসে নেতানিয়াহু’র দেশের হামলা Jun 03, 2025
img
ইউনূস সাহেব, পলিটিকস আর ইকোনমিকস এক নয় : আন্দালিব রহমান পার্থ Jun 03, 2025
img
রাতের মধ্যে দেশের ১০ অঞ্চলে বজ্রসহ ঝড়ের পূর্বাভাস Jun 03, 2025
উপদেষ্টা আসিফকে প্রথম ও শেষ বার্তা জানিয়ে দিলেন ইশরাক হোসেন Jun 03, 2025
img
সরকারি চাকরিতে এনআইডি বাধ্যতামূলক করতে উদ্যোগ ইসির Jun 03, 2025
img
সাবেক মন্ত্রী-এমপি-সচিবসহ ১৫ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা Jun 03, 2025
img
সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা Jun 03, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই না : সালাহউদ্দিন Jun 03, 2025
ম্যাজিস্ট্রেটকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর' বলে হেনস্তা, অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে Jun 03, 2025
অরাজনৈতিক উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করছে! Jun 03, 2025
জীবনে কখনো উট দেখিনি, এবার চোখের সামনে! বিশ্বাসই হচ্ছিল না Jun 03, 2025
উপদেষ্টার নির্দেশনা ছাড়া পিএসরা দুর্নীতি করে নাই: আমিনুল হক Jun 03, 2025
img
‘আলাদা ব্যক্তিকে নয়, একই পাত্রকে দু’বার বিয়ে করেছি’ Jun 03, 2025
img
আইপিএল ফাইনালে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বৃষ্টি Jun 03, 2025
img
প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ফেরানো সম্ভব হয়েছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা Jun 03, 2025