বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫-এ সরকারি পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে উদাহরণ সৃষ্টি করায় ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় জাতীয় সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে। অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত ঘোষণার সাহসী সিদ্ধান্ত এবং তার কার্যকর বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের উদ্যোগে আয়োজিত এ বিশেষ আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার মো. শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী সম্মাননা গ্রহণ করেন। সম্মাননা গ্রহণ শেষে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের নেতৃত্বে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। অধূমপায়ীদের সুরক্ষা বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিভাগের সব জেলা প্রশাসকের অফিস প্রাঙ্গণকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে এবং ধূমপানের জন্য কোনো নির্ধারিত স্থান রাখার অনুমতি নেই। এই সম্মাননা আমাদের কাজের স্বীকৃতি এবং ভবিষ্যতের জন্য বড় অনুপ্রেরণা।
ঢাকা বিভাগের অধীন প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে ধূমপানমুক্ত করতে একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনা অনুসরণ করা হয়। গত ২০ মার্চ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ‘অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় অফিসের অভ্যন্তরে শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখার নিশ্চয়তায় করণীয়’ শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা প্রশাসকের অফিস প্রাঙ্গণ ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে প্রাঙ্গণে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ‘অফিস প্রাঙ্গণ ধূমপানমুক্ত’ লেখা সাইনবোর্ড স্থাপন এবং পূর্বে নির্ধারিত কোনো ধূমপানকেন্দ্র থাকলে তা বাতিলের আদেশ জারি করা হয়।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারি দপ্তরগুলোতে কর্মপরিবেশকে স্বাস্থ্যসম্মত রাখার একটি মডেল তৈরি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য বিভাগ ও দপ্তরের জন্যও অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একই অনুষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখায় জেলা ক্যাটাগরিতে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা ক্যাটাগরিতে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা প্রশাসনকেও জাতীয় সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যে আয়োজিত দিবসটির অংশ হিসেবে শনিবার সকালে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর।
আরআর