গাজায় ইসরাইলের ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা এখন ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে: জাতিসংঘ

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উপত্যকায় ইসরাইলের ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা এখন ভয়াবহ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রোববার (১ জুন) ভোরে ফিলিস্তিনের দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় ক্ষুধার্ত ও অনাহারি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় গাজা উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তের রাফাহ শহরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এই শহরটি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ভয়াবহ বোমাবর্ষণে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, সহায়তার নামে এই অপমানজনক ব্যবস্থার ফলে হাজার হাজার ক্ষুধার্ত ও অসহায় মানুষকে বহু মাইল হেঁটে যেতে বাধ্য করা হয়েছে ওই ধ্বংসস্তূপে। আবার সেখানে গিয়ে ত্রাণের পরিবর্তে বুক ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে বুলেটে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণ নিরাপদ ও বৃহৎ পরিসরে পরিচালিত না হলে গণদুর্ভিক্ষ অনিবার্য। ইসরাইলকে অবশ্যই গাজা থেকে অবরোধ তুলে নিতে হবে এবং জাতিসংঘকে বাধাহীন ও নিরাপদভাবে ত্রাণ প্রবেশ ও বিতরণের অনুমতি দিতে হবে। এই সংকট মোকাবিলায় একমাত্র ইউএনআরডব্লিউএই সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিশর থেকে পাঠানো তিন হাজারের বেশি সহায়তা ট্রাক উপত্যকায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে। যার ফলে ডায়রিয়া, মেনিনজাইটিসসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

গাজার এই পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয় আখ্যা দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি ও লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। বাগদাদে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান তারা।

আরএম/এসএন 


Share this news on:

সর্বশেষ

img
নদী বাঁচাতে ঈদযাত্রায় প্লাস্টিককে ‘না’: লঞ্চঘাটে বিশেষ প্রচারাভিযান Jun 05, 2025
img
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা: প্রস্তুতিতে ৫৫ মিলিয়ন ডলার সংকটে ডব্লিউএফপি Jun 05, 2025
img
তদন্ত প্রতিবেদনে নাসুমের ঘটনা ফাঁসে তামিমের নাম! Jun 05, 2025
img
১২ ঘন্টায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করবে ডিএসসিসি Jun 05, 2025
img
‘ব্যথায় কাঁদছে’—চাহালের দুঃসময় নিয়ে মুখ খুললেন মহওয়াশ Jun 05, 2025
img
রাজধানীতে পশুর বর্জ্য অপসারণে প্রস্তুত ২০ হাজার ২৬৭ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী Jun 05, 2025
img
দুদু-বুলুকে বিএনপির লিখিত সতর্কবার্তা Jun 05, 2025
img
দ্য রাজা সাব’ ছবির জন্য পারিশ্রমিক কমালেন প্রভাস, নিচ্ছেন ১০০ কোটি Jun 05, 2025
img
আরাফার ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন বাংলাদেশি হাজিরা Jun 05, 2025
img
শ্রীলঙ্কা সিরিজের টেস্ট দলে জায়গা হয়নি সোহানের, ওয়ানডেতে সুযোগের সম্ভাবনা Jun 05, 2025
img
ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৪৩ ফিলিস্তিনির Jun 05, 2025
img
গাইবান্ধায় নিষিদ্ধ পলিথিনের গোডাউনে সেনাবাহিনীর অভিযান Jun 05, 2025
img
ঘোস্ট হারিকেন: মডেলের ভুল পূর্বাভাসে বিভ্রান্তি Jun 05, 2025
img
ডেম্বেলেই এবারের ব্যালন ডি’অরের যোগ্য দাবিদার: দেশম Jun 05, 2025
img
চলতি মৌসুমে হজ করেছেন ৬ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি Jun 05, 2025
img
ঈদ উপলক্ষে বিএনপির বিশেষ কর্মসূচি Jun 05, 2025
img
ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম পুলিশের সতর্কবার্তা Jun 05, 2025
img
উয়েফা নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে রাতে মাঠে নামছে স্পেন ও ফ্রান্স Jun 05, 2025
img
চামড়া বহন ও সংরক্ষণ নিয়ে বিসিকের নির্দেশনা Jun 05, 2025
img
১৬ দিন পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির Jun 05, 2025