ভারতীয় সিনেমা এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলেছে। ‘মহাভারত’ নামক শ্রেষ্ঠ ভারতীয় মহাকাব্যকে কেন্দ্র করে বড়পর্দায় হাজির হচ্ছেন দুই কিংবদন্তি নির্মাতা — আমির খান ও এস. এস. রাজামৌলি। তবে এই দুই প্রকল্পের মধ্যে কোনও প্রতিযোগিতা নয়, বরং দুটি ভিন্ন ব্যাখ্যা ও দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে এক ঐতিহ্যকে নতুনভাবে উপস্থাপনের প্রয়াস।
আমির খান বহুদিন ধরেই মহাভারত নির্মাণের স্বপ্ন দেখে আসছেন। রাজকুমার হিরানির পরিচালনায় ‘ধুণ্ডিরাজ ফালকে’-র বায়োপিকের শুটিং শেষ হওয়ার পরেই শুরু হবে এই প্রজেক্টের কাজ। শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে অক্টোবর মাসে।
আমিরের এই মহাভারত হতে চলেছে তাঁর সবচেয়ে ব্যক্তিগত প্রকল্প। এমনও শোনা যাচ্ছে, এটি তাঁর অভিনয়জীবনের শেষ কাজ হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি মাল্টি-পার্ট সিনেমা, ওয়েব সিরিজ বা হাইব্রিড ফর্ম্যাটে নির্মিত হতে পারে।
এই প্রজেক্টে আমির বাহ্যিক চমক নয়, বরং চরিত্রগুলোর মনস্তত্ত্ব, আত্মদ্বন্দ্ব এবং দর্শনের দিকটিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর মতে, “প্রত্যেকেরই বলার মতো নিজস্ব মহাভারত আছে। আমারটাও আমি আমার মতো বলব।”
অন্যদিকে, রাজামৌলি বহুবার জানিয়েছেন যে মহাভারত নির্মাণ তাঁর জীবনের স্বপ্ন। বর্তমানে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন মহেশ বাবুর সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার সিনেমা নিয়ে, যার নাম SSMB29। এই ছবিটি মুক্তি পেতে পারে ২০২৭ সালের দিকে।
এই কাজ শেষ হওয়ার পরেই তিনি সম্পূর্ণ মনোযোগ দেবেন ‘মহাভারত’ নির্মাণে। তাঁর মহাভারত হবে একটি ভিএফএক্সনির্ভর বিশাল ক্যানভাসে নির্মিত ফ্র্যাঞ্চাইজি, যেখানে ভারতীয় পুরাণের সঙ্গে মিলবে আন্তর্জাতিক সিনেমার গুণমান ও বিশালতা।
এই দুই মহাভারতের মধ্যে সময়ের দিক থেকে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনই নির্মাণশৈলী এবং দর্শকধারণার ক্ষেত্রেও রয়েছে স্পষ্ট ভিন্নতা। আমির যেখানে আত্মবিশ্লেষণ ও চরিত্রের গভীরতা নিয়ে আসবেন, রাজামৌলি উপহার দেবেন চাক্ষুষ বিস্ময় ও কল্পনার বিপুল বিস্তার।
এই দুই দৃষ্টিভঙ্গিই ভারতীয় দর্শকদের জন্য এক অভূতপূর্ব সুযোগ এনে দিচ্ছে। একজন নির্মাণ করছেন আত্মার কাহিনি, আরেকজন নির্মাণ করছেন এক দৃশ্যমান মহাযজ্ঞ। এটি কোনো প্রতিযোগিতা নয়, বরং ভারতীয় সিনেমার জন্য এক যুগান্তকারী যুগল সম্ভাবনা।
টিকে/টিএ