পৃথিবীর নিচে সব মহাসাগরের চেয়ে ৩ গুণ বড় জলরাশির সন্ধান!

বিশ্বজুড়ে পানির সংকট দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে। এমন সময় বিজ্ঞানীরা এমন এক চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। তাঁদের দাবি, পৃথিবীর পায়ের তলার প্রায় ৭০০ কিলোমিটার গভীরে রয়েছে এক বিশাল জলরাশি— যার আয়তন পৃথিবীর সব সাগর-মহাসাগর মিলে যা হয়, তার চেয়েও তিন গুণ বড়!

এই বিশাল পানির ভাণ্ডার কোনো খোলা সাগর নয়। এটি লুকিয়ে আছে একটি বিশেষ ধরনের খনিজের মধ্যে। খনিজটির নাম ‘রিংউডাইট’। রিংউডাইট একটি স্পঞ্জের মতো পাথর, যার ভেতরে পানি আটকে থাকে। এর পারমাণবিক গঠন এমন যে এটি হাইড্রোজেন আকর্ষণ করতে পারে এবং প্রচুর পানি ধরে রাখতে সক্ষম।

নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বসানো প্রায় ২০০০টি ভূকম্প মাপার যন্ত্র (সিসমোগ্রাফ) ব্যবহার করে ৫০০টিরও বেশি ভূমিকম্পের কম্পন বিশ্লেষণ করেছেন। তারা দেখেছেন, ভূমিকম্পের কম্পন যখন পৃথিবীর গভীরে পৌঁছায়, তখন কিছু জায়গায় তার গতি হঠাৎ কমে যায়। এই 'স্লথ' বা ধীরগতির কারণ অনুসন্ধান করতেই আবিষ্কৃত হয় এই রহস্যময় পানির অস্তিত্ব।

প্রশ্ন উঠেছে— এই পানি কি কোনো দিন পৃথিবীর পৃষ্ঠে উঠে আসতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি এমনটা ঘটে, তাহলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। কারণ, এই পরিমাণ পানি যদি একসঙ্গে ভূপৃষ্ঠে চলে আসে, তাহলে পৃথিবীর অধিকাংশ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাবে। শুধু হিমালয়ের মতো কিছু উচ্চ পার্বত্য এলাকা টিকে থাকতে পারে।

তবে এই পানির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো— এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। আগ্নেয়গিরির তীব্র তাপ থেকে ভূপৃষ্ঠকে সুরক্ষা দিতে এই পানি পর্দার মতো কাজ করে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই বিশাল জলের ভাণ্ডার যেন সৃষ্টিকর্তারই এক রহস্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থা।

এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে পানির সংকট মোকাবিলায় কোনো আশার আলো নিয়ে আসতে পারে কি না, তা নিয়ে এখন বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছে জোরালো গবেষণা ও আলোচনা।

এফপি/ এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
'রাজনীতি-২' নিয়ে ফিরছেন প্রকাশ ঝা Jun 05, 2025
img
খালেদা জিয়াকে গরু উপহার দিতে পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় হাজির কৃষক Jun 05, 2025
img
যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য Jun 05, 2025
img
দরদামে না মেলায় বিক্রি কম হচ্ছে গরুর বাজারে Jun 05, 2025
img
নিজের আইডল রোনালদোর সঙ্গে ছবি তুলে আলোচনায় জার্মান ফুটবলার Jun 05, 2025
img
শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ স্কিমে বাংলাদেশ–দক্ষিণ কোরিয়ার সমঝোতা স্বাক্ষর Jun 05, 2025
img
দুই সন্তানের সীমা বাতিল করেছে ভিয়েতনাম: রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম Jun 05, 2025
img
নদী বাঁচাতে ঈদযাত্রায় প্লাস্টিককে ‘না’: লঞ্চঘাটে বিশেষ প্রচারাভিযান Jun 05, 2025
img
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা: প্রস্তুতিতে ৫৫ মিলিয়ন ডলার সংকটে ডব্লিউএফপি Jun 05, 2025
img
তদন্ত প্রতিবেদনে নাসুমের ঘটনা ফাঁসে তামিমের নাম! Jun 05, 2025
img
১২ ঘন্টায় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করবে ডিএসসিসি Jun 05, 2025
img
‘ব্যথায় কাঁদছে’—চাহালের দুঃসময় নিয়ে মুখ খুললেন মহওয়াশ Jun 05, 2025
img
রাজধানীতে পশুর বর্জ্য অপসারণে প্রস্তুত ২০ হাজার ২৬৭ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী Jun 05, 2025
img
দুদু-বুলুকে বিএনপির লিখিত সতর্কবার্তা Jun 05, 2025
img
দ্য রাজা সাব’ ছবির জন্য পারিশ্রমিক কমালেন প্রভাস, নিচ্ছেন ১০০ কোটি Jun 05, 2025
img
আরাফার ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন বাংলাদেশি হাজিরা Jun 05, 2025
img
শ্রীলঙ্কা সিরিজের টেস্ট দলে জায়গা হয়নি সোহানের, ওয়ানডেতে সুযোগের সম্ভাবনা Jun 05, 2025
img
ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৪৩ ফিলিস্তিনির Jun 05, 2025
img
গাইবান্ধায় নিষিদ্ধ পলিথিনের গোডাউনে সেনাবাহিনীর অভিযান Jun 05, 2025
img
ঘোস্ট হারিকেন: মডেলের ভুল পূর্বাভাসে বিভ্রান্তি Jun 05, 2025