সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা গোপন রাখার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (স্থানীয় সময়) জারিকৃত এক প্রেসিডেনশিয়াল মেমোর্যান্ডামে তিনি দাবি করেন, বাইডেনের আশপাশের ব্যক্তিরা তাঁর মানসিক অবস্থা গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়েছিলেন এবং অটোপেনের মাধ্যমে বাইডেনের স্বাক্ষর ব্যবহার করে হাজারো নীতিগত সিদ্ধান্তে সই করিয়েছেন।
ট্রাম্পের এই নির্দেশনা রিপাবলিকানদের সেই পুরনো দাবি ঘিরেই—বাইডেন মানসিকভাবে সক্ষম ছিলেন না এবং তাঁর হয়ে অন্যরা রাষ্ট্র চালিয়েছেন। বিষয়টি ঘিরে তদন্তে সহযোগিতার জন্য প্রেসিডেন্টের আইন উপদেষ্টা, অ্যাটর্নি জেনারেল ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরপ্রধানদের সঙ্গে সমন্বয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, “এই ষড়যন্ত্র আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম বিপজ্জনক ও গভীর উদ্বেগজনক কেলেঙ্কারি। মার্কিন জনগণকে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্ধকারে রাখা হয়েছে—কারা প্রকৃতপক্ষে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করছিল, তা জানতে দেওয়া হয়নি।”
রিপাবলিকানদের অভিযোগ, বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ার পরও তা গোপন রাখা হয়। বাইডেনের অল্প সময়ের মধ্যে প্রকাশ্যে আসা, সাক্ষাৎকারে অনীহা এবং বিতর্ক অনুষ্ঠানে হতাশাজনক পারফরম্যান্সকে তাঁরা এসবের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিতর্কে, বাইডেন—তখন ৮১ বছর বয়সী—কথা বলতে গিয়ে বারবার গড়বড় করেন ও মনোসংযোগ হারান। এতে তাঁর পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা ধাক্কা খায়। পরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতর থেকেই তাঁকে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে শুরুতে চাপ মোকাবিলা করার চেষ্টা করলেও, শেষপর্যন্ত তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে মনোনয়ন দিয়ে সরে দাঁড়ান। তবে নির্বাচনে তিনিও ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক বইয়ে দাবি করা হয়েছে, বাইডেনের নিকটজনেরা তাঁর মানসিক অবস্থা খারাপ জেনেও তা গোপন রেখেছিলেন। এমনকি তিনি কখনো কখনো পরিচিত মুখ চিনতে পারতেন না, যেমন অভিনেতা ও ডেমোক্র্যাটিক দলের সমর্থক জর্জ ক্লুনিকে ভুলে গিয়েছিলেন।
এদিকে, বাইডেনের ‘আগ্রাসী ধরনের প্রোস্টেট ক্যানসার’ ধরা পড়ার খবরও ট্রাম্পের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে। ডানপন্থী মহলের কেউ কেউ দাবি করছেন—এই রোগের বিষয়টি আগে থেকেই বাইডেনের আশপাশের লোকজন জানতেন, কিন্তু তা গোপন রাখা হয়েছিল।
নতুন এই তদন্তে বাইডেনের নির্বাহী আদেশগুলোর পেছনে প্রকৃত সিদ্ধান্তদাতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হবে এবং খতিয়ে দেখা হবে, অটোপেন ব্যবহারের মাধ্যমে কোন কোন নীতিমালা চালু করা হয়েছিল।
এফপি/এসএন