‘কেজিএফ’ দিয়ে দুর্দান্ত যাত্রা শুরু করে হোমবালে ফিল্মস অল্প সময়েই হয়ে উঠেছিল প্যান-ইন্ডিয়া সেনসেশন। দক্ষিণ ভারতের সীমা ছাড়িয়ে বলিউড ও আন্তর্জাতিক বাজারেও এই প্রোডাকশন হাউসের নাম উঠেছিল আলোচনার শীর্ষে। তবে এখন সেই হোমবালে ফিল্মসই প্রশ্নের মুখে — তাদের সাম্প্রতিক প্রজেক্টগুলোর দেরি, অনিশ্চয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতার অভাবে ক্রমেই বাড়ছে সমালোচনা।
প্রথমেই আসে ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ওয়ান’-এর কথা। ঋষভ শেট্টি পরিচালিত এই ছবিটি দক্ষিণ ভারতের পুরনো লোককথা ও কাদম্ব সাম্রাজ্যের ইতিহাস নিয়ে তৈরি হচ্ছে। ছবির হাইপ আকাশছোঁয়া হলেও, শুটিংয়ে একাধিক দুর্ঘটনা ও একটি মৃত্যুর ঘটনা পুরো প্রক্রিয়াকে থমকে দিয়েছে। যদিও মুক্তির সম্ভাব্য তারিখ বলা হয়েছে ২০২৫ সালের ২ অক্টোবর, কিন্তু তা নিয়েও রয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা।
এরপর রয়েছে প্রভাস অভিনীত ‘সালার ২: শৌর্যাঙ্গ পর্বম’। প্রথম পর্বে চমৎকার ভিজ্যুয়াল ও কনসেপ্ট থাকলেও বক্স অফিসে প্রত্যাশামতো সাড়া মেলেনি। দ্বিতীয় কিস্তি এখনো প্রি-প্রোডাকশনের পর্যায়ে। প্রভাস একের পর এক অন্য প্রজেক্টে ব্যস্ত—রাজা সাব, ফৌজি, স্পিরিটসহ লম্বা লাইন। এমন পরিস্থিতিতে সিক্যুয়েলের ভবিষ্যৎ নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
তৃতীয় বড় উদাহরণ হৃত্বিক রোশনের সঙ্গে হোমবালে ফিল্মসের ঘোষিত একটি বিশাল প্রজেক্ট। সামাজিক মাধ্যমে একটি ঘোষণাই এই ছবির পরিচয়, যেখানে নেই নাম, নেই পরিচালক, নেই কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি। ভক্তদের মধ্যে যতই উত্তেজনা থাকুক, বাস্তবে যখন শ্যুটিং শুরুই হয়নি, তখন উত্তেজনার জায়গায় জন্ম নিচ্ছে সংশয়।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে, সমস্যা কোথায়?
তারকার অভাব নেই, ঘোষণাও বেশ বড়সড়। কেজিএফ, কান্তারা কিংবা সালার-এর মতো সিনেমার অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। তবুও হোমবালে ফিল্মস এখন ধরা পড়ছে এক ক্লাসিক ‘ওভার-প্রমিস, আন্ডার-ডেলিভার’ প্রবণতায়। একের পর এক প্রজেক্টের ঘোষণার পরও নির্দিষ্ট কাজ শুরু না হওয়া, শুটিং সেটে নানা সমস্যা, সময়মতো ট্রেলার না আসা—সব মিলিয়ে ব্র্যান্ড ইমেজে ধাক্কা লাগছে।
বর্তমানে দর্শক শুধু ঘোষণা নয়, বিশ্বাস করে কনটেন্টে। ‘আরআরআর’ বা ‘অ্যানিমেল’-এর পর যারা প্রমিজ নয়, প্রমাণ চায়—তাদের চোখে হোমবালে ফিল্মস এখন শুধু ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ নয়, প্রমাণ চাওয়ার জায়গা।
এখনকার অবস্থানটা তাই অদ্ভুত—হোমবালে ফিল্মসের হাতে তারকা আছে, বাজেট আছে, প্রত্যাশা আছে—কিন্তু সেই সবকিছুর ভরসা তৈরি করতে হলে, আগে ক্যামেরা চালু করতে হবে, পোস্টার নয়, প্রগ্রেস দেখাতে হবে। নাহলে ট্রাস্ট ফিরবে না, শুধু হাইপ দিয়ে ইতিহাস লেখা যায় না।
এফপি/ এস এন