বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, পনেরো বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাসকে যেভাবে বারবার বিকৃত করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা তাজউদ্দিন আহমেদকে যদি কেউ মুক্তিযোদ্ধা না বলেন, তাহলে তারা কি ছোট হয়ে যান? অথবা ভাষা আন্দোলনের নেতা অলি আহাদ— যিনি ১৯৫২ সালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন, তাকে অনেকেই আজ স্মরণ করেন না, তাই বলে কি তিনি ছোট হয়ে যান?” তিনি বলেন, “ইতিহাস যারা গড়েছেন, তাদের গুরুত্ব রাজনৈতিক ব্যাখ্যার ওপর নির্ভর করে না।”
রুমিন ফারহানা অভিযোগ করেন, “বাংলাদেশে ইতিহাসের নায়কদের রাজনৈতিক কারণে কখনো দেবতা বানানো হয়, আবার প্রয়োজনে শয়তানও বানিয়ে ফেলা হয়। এটা আমাদের দেশের রাজনীতির চিত্র।”
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সরকার মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে নিজেদের অবস্থানকে ন্যায্যতা দিতে চেয়েছে। ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় দলীয় লোকদের নাম ঢুকিয়ে ভুয়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
বর্তমান অরাজনৈতিক সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই সরকার সংস্কারের কথা বললেও এখনো পর্যন্ত আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সংস্কারে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ দেখিনি।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “একজন সাবেক মন্ত্রী ছিলেন যিনি নয় বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে— এটা তো চূড়ান্ত প্রতারণা।” রুমিনের মতে, যেহেতু বর্তমান সরকার কোনও দলের অধীনে নয়, তাই তারা চাইলেই নিরপেক্ষভাবে একটি সঠিক মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরি করতে পারত।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “এই সরকার কি আসলেই সংস্কার করতে চায়? নাকি মুক্তিযুদ্ধকে নিয়েও তারা আবার নতুন রাজনৈতিক খেলা শুরু করতে যাচ্ছে?”
রুমিন ফারহানা মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধ জাতির অহংকার, একে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা নয়, বরং যথাযথ মর্যাদায় সংরক্ষণ করাই হওয়া উচিত সরকারের প্রধান দায়িত্ব।
এমআর