চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে দুই বছরের শিশু আয়েশা।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দিবাগত রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে অটোরিকশায় থাকা অবস্থায় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারায় নিষ্পাপ শিশুটি। মেয়েকে হারিয়ে বাবা সাজ্জাদুন নূর মিঠুর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
শুক্রবার (৬ জুন) সকালে তিনি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে তিনি লেখেন, যে ট্রেন আমার মেয়ের এত পছন্দ, আজ সেই ট্রেন আমার মেয়েকে আমার থেকে কেড়ে নিলো। আমার সোনামনি এখন আল্লাহর জিম্মায়। সবাই আমার সোনামনির জন্য দোয়া করবেন।
জানা যায়, স্ত্রী জুবাইদা ফেরদৌস ইসরা ও একমাত্র সন্তান আয়েশাকে নিয়ে অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন সাজাদ। কালুরঘাট ব্রিজের বোয়ালখালী অংশে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। তাদের অটোরিকশাটি সেতুর ওপর আটকে পড়ে, আর ঠিক তখনই দ্রুতগতিতে উঠে আসে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন। মুহূর্তেই ওলটপালট হয়ে যায় সবকিছু।
বুকফাটা কষ্টে ভেঙে পড়া আয়েশার বাবা সাজ্জাদ বলেন, আমরা অটোরিকশায় ছিলাম। এটা একেবারে শেষে ছিল। আমাদের সামনে একটা টেম্পো ছিল। ট্রেনের চালক বারবার হর্ন দিচ্ছিলেন। লাইনম্যান ব্রিজের ওপর চলে আসে। টেম্পোটা ক্রস করে চলে যায়। কিন্তু আমাদের অটোরিকশা আটকে যায়। আমি জানি না এটা কাদের গাফিলতি। তবে কর্তৃপক্ষ এজন্য দায়ী। আমার একটাই দাবি-এই সেতুতে আমি আর ট্রেন চলতে দেব না। যদি চলে তবে আমি আমার জীবন দিয়ে দেব। আমার ২ বছরের বাচ্চা। আমার ৩০ বছর বয়স। আমি গোনাহ করেছি। কিন্তু সে তো নিষ্পাপ!
প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার সময় একটি গাড়ি সেতুর ওপর নষ্ট হয়ে যানজট সৃষ্টি করে। তখন কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী ট্রেনটির চালক লাল সিগন্যাল ও গার্ডের লাল পতাকা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে কালুরঘাট সেতুতে ওঠে পড়ে। এর ফলে অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এসএম/টিকে