গত মে মাসেই মিঠি নদীর পলি নিষ্কাশন কেলেঙ্কারিতে অভিনেতা ডিনো মোরিয়াকে তলব করেছিল মুম্বাই পুলিশ। কোটি কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতের অভিযোগ উঠেছে অভিনেতার বিরুদ্ধে। এবার সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তে শুক্রবার সাতসকালে ডিনোর বাড়িতে পৌঁছন ইডি আধিকারিকরা।
বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, মিঠি নদীর পলি নিষ্কাশনে ৬৫ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে এদিন মুম্বাই এবং কেরলের ১৫টি এলাকায় তদন্ত অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। সেই তালিকায় বলিউড অভিনেতা ডিনো মোরিয়া যেমন রয়েছেন, তেমনই বৃহন্মুম্বাই পৌরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার প্রশান্ত রামুগাড়ে এবং আরও বেশ কজন ঠিকাদারও রয়েছেন। জানা গিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে শুক্রবার সকালে এঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে ইডির টিম পৌঁছে গিয়েছিল। এর আগে শিব সেনা (উদ্ধব) ঘনিষ্ঠ অভিনেতা ডিনোকে দু’বার জেরা করে আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা। প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে এই মামলার সঙ্গে ডিনো মোরিয়ার নাম জুড়ল? মুম্বাই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখা সূত্রে খবর, মামলায় মূল অভিযুক্ত কেতন মেহেতার সঙ্গে ডিনো মোরিয়া এবং তাঁর ভাই সান্তিনো মোরিয়ার একাধিকবার ফোনে কথা হয়েছে। কল লিস্ট ঘেঁটে সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই এবার ডাক পড়ল বলিউড অভিনেতার। আর সেই কারণেই সম্প্রতি মুম্বাই পুলিশের তরফে অভিনেতাকে তলব করা হয়।
বাণিজ্যনগরীতে মিঠি নদী বরবারই গুরুত্বপূর্ণ। বন্যা প্রতিরোধের জন্য এই নদীখাতের পলি পরিষ্কার করার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল মুম্বই প্রশাসন। আর সেখানেই একটা বড় অঙ্কের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। এবার চলতি মরশুমে যখন ভারী বর্ষণের জন্য জলমগ্ন মুম্বই, এমতাবস্থাতেই মে মাসে ডিনো মোরিয়াকে ডেকে পাঠায় মুম্বাই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখা। সংশ্লিষ্ট মামলায় জাল নথি পেশ, তহবিল তছরূপের অভিযোগ রয়েছে। মিঠি নদীর পলি নিষ্কাশনের জন্য প্রশাসনের তরফে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেটা খরচ করা হয়নি। তদন্তে উঠে এসেছে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্যও। জানা গেল, মিঠি নদী পরিষ্কার করার জন্য যে কর্মীদের নিযুক্ত করা হয়েছিল, তারা ভুয়ো লগবুক, স্লিপ জমা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ভাড়া করা যন্ত্রপাতি বাবদ অতিরিক্ত ৩ কোটি টাকার বিল বানানোর অভিযোগও রয়েছে। এবার সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত এগোতেই অভিনেতা ডিনো মোরিয়ার নাম উঠে এসেছে।
প্রসঙ্গত, মিঠি নদীর পলি সরানো এবং সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প সম্পর্কিত নানা কাজে হাজার কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আর সেই মামলাতেই বর্তমানে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই আর্থিক দুর্নীতির জন্য সরকারি তহবিলের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই হিসেব নিকেশ করতেই এবার আরও জোরদার তদন্ত শুরু হয়েছে। মে মাসের ৩ তারিখ সিট গঠন করেছে মুম্বাই পুলিশ। সেই প্রেক্ষিতেই ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে ইতিমধ্যে। যে তালিকায় পাঁচ ঠিকাদারও রয়েছেন।
আরআর/টিএ