কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। দেবে গেছে অভ্যন্তরীণ সড়কের একাধিক স্থান। পর্যটকদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। বন বিভাগ বলছে, বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।
প্রকৃতির এক মোহনীয় নিদর্শন মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত। শুষ্ক মৌসুমে এর ধারা ক্ষীণ হলেও বর্ষায় ফিরে আসে রূপ-লাবণ্য। এ সময় জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে বেড়ে যায় পর্যটকের আগমন।
তবে এবার বর্ষা শুরুর আগেই টানা ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে জলপ্রপাতের অভ্যন্তরীণ সড়কে দেখা দিয়েছে বিস্তর ফাটল। দেবে গেছে তিন থেকে ফুট পর্যন্ত পাকা রাস্তা। ধসে পড়েছে পাহাড় ঘেঁষা প্রাচীর। জলপ্রপাতের কুণ্ডে যাওয়ার মূল সিঁড়ির নিচের মাটি সরে গিয়ে পর্যটকদের চলাচলের পথ হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ।
আশঙ্কাজনকভাবে ভাঙছে খাল পাড়ও। বালুর বস্তা ফেলে ফাটল ভরাটের চেষ্টা করছে বনবিভাগ। গত ৫ জুন পর্যটকদের চলাফেরায় সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে বন বিভাগ। সরেজমিনে মাধবকুণ্ডে গেলে কথা হয় পর্যটক মো. দেলোয়ার, লাবলুসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।
পর্যটকরা জানান, মাধবকুণ্ডের পর্যটক চলাফেরার অভ্যন্তরীণ সড়কের ফাটল ভয়াবহ অবস্থা। বিভিন্ন স্থানের পাহাড় ধসে পড়ছে। কুন্ডে যাওয়ার সিঁড়ির নীচ দিকের মাটি সরে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে মাধবকুন্ডে আসা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনের উচিত এখনই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার।
তবে পর্যটকদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ পুলিশের। মাধবকুন্ড পর্যটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক সুমন সিংহ জানান, পর্যটকদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। বড়লেখা (বনবিভাগ) রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. রেজাউল মৃধা জানান, গত ২৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে এ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বন বিভাগ প্রাথমিক পর্যায়ে বালির বস্তা দিয়ে মেরামতের চেষ্টা করছে। পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে ২০১৭ সালের জুন মাসে একইভাবে পাহাড়ি স্রোত ও ভারী বর্ষণ মাধবকুণ্ডের সড়কের একাধিক স্থান মাটির নীচ দিকে দেবে যায়। এতে সড়কের কয়েকটি স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, সরকার ২০২১ সালে ২৬৭ একর আয়তনের মৌলভীবাজারের বড়লেখা পাথারিয়া পাহাড়ি ভূমিকে মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক হিসেবে ঘোষণা করে।
এসএম/টিকে