ইরানে আটটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দীর্ঘদিন ধরে ইরানকে পরমাণু প্রযুক্তি ও সহায়তা দিয়ে আসছে রাশিয়া। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে তেহরানে সরাসরি পরমাণু স্থাপনা গড়ে তুলতে যাচ্ছে মস্কো।
ইরানের পার্লামেন্টে রাশিয়ার সঙ্গে একটি নতুন পরমাণু চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক কমিশনের মুখপাত্র জানান, আটটি পরমাণু কেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়া, যার মধ্যে চারটি থাকবে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বুশেহরে।
এই চুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমাতে বিকল্প একটি সামরিক ও কৌশলগত কাঠামো গড়ে তুলছে ইরান ও রাশিয়া। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্যোগ শুধু জ্বালানি প্রকল্প নয়, বরং এটি একটি কৌশলগত বার্তা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের জন্য।
এর আগে গত মাসে ইরানের পার্লামেন্ট রাশিয়ার সঙ্গে ২০ বছরের কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি অনুমোদন করেছে। এই চুক্তির আওতায় দুই দেশের মধ্যে সামরিক মহড়া, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিনিময় এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও বাড়বে।
এই চুক্তিতে সই হয়েছে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র দুই দিন আগে, মস্কোতে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে। এপ্রিলেই রুশ পার্লামেন্ট চুক্তিটি অনুমোদন দেয়।
ইরানের এই ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। গত কয়েক মাস ধরে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চূড়ান্ত উত্তেজনা চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে সমঝোতা না হলে ইরানে সামরিক হামলার বিকল্প থাকবে না।
অন্যদিকে, ইরান জানিয়ে দিয়েছে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে না। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই করতে পারবে না।
এখন রাশিয়া সরাসরি পরমাণু স্থাপনায় যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট আগেই হুশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়ার অবকাঠামোতে যেকোনো হামলা মেনে নেওয়া হবে না। তাই ইরানের স্থাপনায় হামলা চালাতে গেলে অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে।
টিকে/টিএ