পেসের স্বর্গরাজ্য বলা হয় পাকিস্তানকে। এর মধ্যে কয়েকটি নাম ইতিহাসের পাতায় কিংবদন্তি হিসেবেই স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তেমনই একজন পাক কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। সম্প্রতি ‘সুলতান অব সুইং’খ্যাত এই তারকার সম্মানে ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
কিন্তু সেটি প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক ট্রোলে মেতেছেন নেটিজেনরা। ইতোমধ্যে ওয়াসিম আকরাম নিজেও এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন।
১৯৯৯ সালের আইসিসি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে ট্রেডমার্ক বোলিংয়ের সেই অ্যাকশন ফুটিয়ে তোলা হয় আকরামের ভাস্কর্যে। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই ভাইরাল হয়ে যায়। যেখানে হাসির রোল শুরু হয়েছে ভাস্কর্য নির্মাতাকে নিয়ে। মূলত সবার আপত্তিটা মুখাবয়ব নিয়ে। অ্যাকশন থেকে শুরু করে উচ্চতা সবকিছু ঠিক থাকলেও ভাস্কর্যের মুখের অভিব্যক্তি আকরামের মতো হয়নি। চ্যাপ্টা হয়ে গেছে মুখ।
যদিও হায়দরাবাদের নিয়াজ স্টেডিয়ামের সামনে ওয়াসিম আকরামের এই শিল্পকর্ম গত এপ্রিলে উন্মোচন করেছিল পিসিবি। তবে সেটি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করল সম্প্রতি। নেটিজেনদের অনেকেই বিশ্বকাপজয়ী এই তারকার শিল্পকর্মে পিসিবি ও নির্মাতার গাফলতি দেখছেন। অনেকেই বলছেন অ্যাকশন ছাড়া আর কিছুতেই ওয়াসিম আকরামকে চেনা যাচ্ছে না। আবার কারও মতে, মার্কিন কিংবদন্তি অভিনেতা ও পরিচালক সিলভেস্টার স্ট্যালোনের মতো হয়েছে এই ভাস্কর্যের মুখাবয়ব।
তবে ভাস্কর্য নির্মাতার নিবেদনের প্রশংসা–ই ঝরেছে ওয়াসিম আকরামের মুখে। বাঘের আরেকটি বিকৃত ভাস্কর্যের সঙ্গে তুলনা করে নিজের শিল্পকর্মটি ভালো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সাবেক এই বাঁ-হাতি পেসার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে আকরাম লিখেছেন, ‘হায়দরাবাদের নিয়াজ স্টেডিয়ামে বানানো আমার প্রতিকৃতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। (এই) বাঘের চেয়ে আমারটা নিশ্চিতভাবেই ভালো হয়েছে।’
এ ছাড়া ভাস্কর্য নির্মাতার প্রশংসা করে আকরামের ভাষ্য, ‘এখানে যে ধারণা (নিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে) সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। নির্মাতাকে এর কৃতিত্ব দিতে হবে, তার প্রচেষ্টার জন্য পুরো নম্বরই পাবেন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।’ ওয়াসিমের ওই পোস্টের মন্তব্য ঘরেও তার অনুসারীরা নানা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। কেউ তার মন্তব্যের প্রশংসা করছেন তো, আবার কেউ বিদ্রুপ করছেন পিসিবি ও ভাস্কর্য নির্মাতাকে নিয়ে।
১৯৮৪ সালে পাকিস্তানের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ওয়াসিম আকরামের। এরপর যখন ২০০৩ বিশ্বকাপের পর যখন ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন ততদিনে তিনি হয়েছেন সুইং অব সুলতান। নামের পাশে ৯১৬টি আন্তর্জাতিক উইকেট। প্রথম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে পূর্ণ করেছিলেন ৫০০ উইকেটের মাইলফলক। কিংবদন্তি এই পেসার টেস্টে ৪১৪ এবং ওয়ানডেতে ৫০২ উইকেট শিকার করেন।
১৯৯২ সালে পাকিস্তানের একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের আসরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ওয়াসিমের। ১০ ম্যাচে ১৮.৭৭ গড় এবং ১৮ উইকেট নিয়ে তিনি হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার। এরপর ওয়াসিমের নেতৃত্বে পাকিস্তান ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনালেও উঠেছিল।
যদিও শিরোপার নিকটে গিয়েও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।
আরএম/এসএন