বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) চিঠি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনন্দবাজার।
চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, জীবৎকালে সিরাজগঞ্জের ওই বাড়িতে বহুবার গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। সেখানে বসে বহু সাহিত্য রচনা করেছেন তিনি। যা ভাঙা হয়েছে, তা শুধু বাড়ি নয়, ‘সৃজনশীলতার ঝরনা’। এই নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলার আরজিও কেন্দ্রকে জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে আরও জানিয়েছেন, এই ভাঙচুরের ঘটনা শুধু ‘বিস্ময়কর নয়, দুর্ভাগ্যজনক’ও। ভারতের গর্ব, সংস্কৃতির জন্য এই ভাঙচুর ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে জানিয়েছেন তিনি। আমাদের ‘সংবেদনশীলতা, সম্পদ, নস্টালজিয়া’য় আঘাত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বদেশি আন্দোলনের সময় এই কবিই বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।
কবির শিকড়ে আঘাত হানা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘বাংলার মানুষের কাছে এই ঘটনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উত্তরসূরির ওপর হামলা। বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য রবীন্দ্রনাথের কাছে চিরঋণী।’
মুখ্যমন্ত্রীর আরজি, এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেশী দেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলুক কেন্দ্রীয় সরকার।
তিনি বলছেন, ‘প্রতিবেশী দেশের সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কঠোরভাবে কথা বলার জন্য আমি আপনাকে আরজি জানাচ্ছি। যাতে এই জঘন্য কাজ যারা করেছেন, তাদের বিচার হয়। ইতোমধ্যেই অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কাজ না হয়, সে জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিবাদ হওয়া উচিত।’
মমতা চিঠিতে নরেন্দ্র মোদিকে এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে রবীন্দ্রনাথ শুধু বাংলায় নয়, গোটা পৃথিবীতে বিখ্যাত।
এর আগে গত মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই বাড়ির ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় কয়েকজন। আসবাব, জানলা ভাঙচুর করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ির নিরপত্তারক্ষীদের সঙ্গে এক দলের বচসা হয়। সাইকেল রাখার টোকেন দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। বচসা মারামারিতে গড়ায়। এক কর্মীকেও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কাজও চলছে। এ নিয়েই মোদিকে চিঠি দিলেন মমতা।
আরআর/এসএন