মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ফের চরমে। ইরানের রাজধানী তেহরানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।
শুক্রবার (১৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ফের চরমে। ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্ব দিকে বিশাল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তারা ‘নেশন অফ লায়ন্স’ নামে একটি পূর্বপরিকল্পিত সামরিক অভিযানে ইরানে আঘাত হেনেছে। টাইমস অফ ইসরাইলের বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘এই হামলাটি উচ্চমানের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে এবং এর মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা। দুই ডজনেরও বেশি জেট বিমানের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযান ছিল নিখুঁতভাবে পরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্ট।’
অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন, ‘এই অভিযান যতদিন প্রয়োজন চলবে, যতক্ষণ না মিশন সম্পন্ন হয়। ইরান শুধু আমাদের জন্য নয়, সমগ্র অঞ্চলের জন্য হুমকি। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেব।’
তবে ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি অভিযোগ করেছে, ইসরাইলি হামলায় আবাসিক ভবনকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ ইসরায়েল অস্বীকার করেছে।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল নিজের ভূখণ্ডেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। দেশটির সামরিক মুখপাত্রের দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৩টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারাদেশে সব ধরনের শিক্ষামূলক কার্যক্রম, সমাবেশ এবং কর্মক্ষেত্রের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে-প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘দেশের প্রতিরক্ষা নীতিতে তাৎক্ষণিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। সমস্ত অঞ্চলকে পূর্ণ কার্যক্রম স্তর থেকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম স্তরে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
এই ঘটনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরাইলের এই হামলা একদিকে যেমন তাদের নিরাপত্তার অবস্থান শক্তিশালী করেছে, তেমনি ইরানকে প্রতিশোধে উসকে দিচ্ছে। ফলে পরবর্তী কয়েকদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
আরআর/এসএন