রাজধানীর হাজারীবাগ ঝাউচর এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে বাবার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ছেলে রাহাবুল ইসলাম রাসেল (১৬) নিহত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) রাত পৌনে ১১টার দিকে ঝাউচর আমলা টাওয়ার রোডের একটি বাড়ির নিচতলার ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় রাসেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক রাত পৌনে ১২টার দিকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত রাসেল একটি হোটেলে কাজ করতো।
তার মামা হুমায়ুন কবির জানান, তাদের বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায়। বর্তমানে ঝাউচর আমলা টাওয়ার রোডের একটি বাড়ির নিচতলার ভাড়া থাকেন। রাত ১১টার দিকে রাসেলের বাবা জুয়েল রানা নিজে তাদেরকে ফোন দিয়ে জানায়, সে তার ছেলে রাসেলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। তার অবস্থা ভাল না, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
পরে প্রতিবেশীরা রক্তাক্ত অবস্থায় রাসেলকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
হুমায়ুন কবির আরও জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে রাসেল ছিল মেজ। তার বড় ভাই পশু চিকিৎসক এবং ছোট ভাই মাদরাসা ছাত্র। তারা দুজন গ্রামের বাড়িতে থাকে। রাসেল আর তার বাবা জুয়েল ঝাউচারের ওই বাসার নিচ তলায় ভাড়া থাকেন। আর রাসেলের মা শাহনাজ বেগম জর্ডান প্রবাসী। হাজারীবাগ বাজারে একটি হোটেলের কারিগর রাসেল। আর তার বাবা জুয়েল রায়েরবাজার এলাকায় অন্য একটি হোটেলে কাজ করে।
হুমায়ুন জানান, সম্প্রতি রাসেলকেও দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন তার মা। তবে ছেলের বদলে জুয়েল রানা নিজে প্রবাসে যেতে চাচ্ছিল। তাকে নেয়ার ব্যবস্থা না করলে সে পরিবারে অশান্তি করবে এবং অন্য একটি বিয়ে করে চলে যাবে বলে প্রায়ই হুমকি দিত। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। এর জের ধরেই শনিবার রাতে জুয়েল তার ছেলেকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে বলে ধারণা পরিবারের।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্বজনরা ওই কিশোরকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
আরআর