ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিরোধী আন্তর্জাতিক জোটের সদস্যরা ইরাকের আকাশসীমায় দুটি ইরানি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যেগুলো ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছিল। দুজন ইরাকি সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এএফপি রবিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
এক কর্মকর্তা জানান, ‘আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক জোট ইসরায়েলগামী দুটি ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।’ পশ্চিম ইরাকের এই সামরিক ঘাঁটিতে বিদেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি আরো জানান, শনিবার দিবাগত রাতে এই ড্রোন দুটি গুলি করে নামানো হয়।
এ ছাড়া অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, ড্রোনগুলো জোটের প্রতিরক্ষা এলাকার ভেতরে প্রবেশ করেছিল এবং সেখানে থাকা বাহিনীকে যেকোনো সম্ভাব্য হুমকির ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এদিকে ইসরায়েল শুক্রবার ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক লক্ষ্যবস্তুতে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান শত শত ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করে।
তবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের কয়েকটি ইরাকের ভূমিতে, মূলত মরুভূমি এলাকায় পতিত হয়, যাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে ইরাকি এক কর্মকর্তা শুক্রবার জানান, জোটের সদস্যরা ওই দিনও একটি ‘বিস্ফোরক ড্রোন’ ভূপাতিত করেছিলেন।
ইরাকের বাগদাদ সরকার তেহরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তাদের কৌশলগত অংশীদারি রয়েছে। আইএসবিরোধী জোটের অংশ হিসেবে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা ইরাকে মোতায়েন রয়েছে।
বাগদাদ ও ওয়াশিংটন জোটের সেনা প্রত্যাহার নিয়ে একটি সময়সূচি নির্ধারণ হয়েছে। সেই অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জোটের সেনারা আইন আল-আসাদসহ ইরাকের কেন্দ্রীয় অংশের ঘাঁটিগুলো ত্যাগ করবে এবং ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ তারা উত্তরাঞ্চলের স্বশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চল থেকেও সরে যাবে।
এদিকে প্রভাবশালী ইরাকি সশস্ত্র গোষ্ঠী কাতায়েব হিজবোল্লাহ রবিবার যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, ইরানে ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ করলে তারা কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে। গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের অন্যের সামরিক সহায়তার প্রয়োজন নেই, তাদের যথেষ্ট শক্তি ও লোকবল রয়েছে, যাতে তারা (ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন) নেতানিয়াহুকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে।
আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু বাহিনীর চলাফেরা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।
যদি যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে, আমরা সরাসরি ও বিনা দ্বিধায় তাদের স্বার্থ ও ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে আঘাত করব।’
আরএম/টিএ