শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর আগে জেনেছিলেন প্রেস সচিব! সোর্স কারা ছিলেন?

৫ আগস্টের নাটকীয় রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে একটি খবর সবার আগে সামনে আসে—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি প্রথম জানান ড. ইউনূসের তৎকালীন প্রেস সেক্রেটারি, যিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন যে তার সোর্স ছিল "গণভবনের ভেতরে।"

তিনি বলেন, “আমার সোর্স ছিল গণভবনে, তারা আমাকে নিশ্চিত করেছে। আমি একজনের থেকে নেওয়ার পর, আরেকজনের কাছ থেকে রিকনফার্ম হয়েছি।” যদিও সেই সোর্সের নাম তিনি গোপন রেখেছেন, তবে অনেকে ধারণা করেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারিই ছিলেন সেই শক্তিশালী উৎস।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “আমার ভুল রিপোর্টিং হলে সেটি চার হাজার বার ছড়াতো। তখন একটি সরকার আমাকে প্রসিকিউটও করতে পারতো। তাই দুই সোর্স থেকে নিশ্চিত হয়ে তারপরই খবর পাঠাই।”

তার পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি সংবাদ প্রকাশ করলে দ্রুতই দেশের বিভিন্ন টিভি ও পত্রিকা তাদের ওয়েবসাইটে তা ছড়িয়ে দেয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই সেনাপ্রধানের ঘোষণার কথা আসে সামনে, তখন তিনি নিশ্চিত হন—“ইট'স ওভার।”

সেদিনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও জানান, সকাল থেকেই গণভবন ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। জানা যায়, দুটি বড় মিছিল গণভবনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল—একটি উত্তরা থেকে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এবং অন্যটি যাত্রাবাড়ি-শ্যামপুর দিক থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। নিরাপত্তা বাহিনীর আশঙ্কা ছিল, জনতার এই ঢল সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।

তখন শেখ হাসিনাকে বলা হয়, “আপনি না গেলে, আমরা সবাই মারা যাবো।” এসএসএফ ও সামরিক কর্মকর্তাদের চাপে তিনি গণভবন ত্যাগে বাধ্য হন। প্রথমে কুর্মিটোলা এয়ারবেস দিয়ে ঢাকা ছাড়ার পরিকল্পনা থাকলেও নিরাপত্তার কারণে সিদ্ধান্ত বদলে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে আগরতলা হয়ে ভারতে যাওয়া হয়।

প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সেদিন বিটিভিতে একটি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রস্তুতির জন্য সময় না থাকায় তা আর সম্ভব হয়নি।

সবশেষে তিনি বলেন, “যে নেতার চারপাশে সমর্থক থাকে না, বাহিনীর ওপর আস্থা থাকে না, তার পতন নিশ্চিত—সেদিন তাই হয়েছিল।”  

এসএম

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইরানের হামলা প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইল ইসরায়েল Jun 16, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে শীর্ষে বাংলাদেশ Jun 16, 2025
img
এবার বিভিন্ন দেশে নিজেদের দূতাবাস বন্ধ করল ইসরায়েল Jun 16, 2025
img
জুনের প্রথম ১৫ দিনে করোনায় প্রাণ গেল ৪ জনের Jun 16, 2025
img
দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় ছাত্রদল নেতাকে শোকজ Jun 16, 2025
img
ঢাকায় বৃষ্টির পূর্বাভাস, কমতে পারে গরম Jun 16, 2025
img
কখনও কখনও যুদ্ধের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে হয় : ট্রাম্প Jun 16, 2025
img
দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে দুবাই, ঢাকা ২৩তম Jun 16, 2025
img
এরদোয়ানের সঙ্গে ছবি নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে যা জানালেন আমির খান Jun 16, 2025
img
সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করায় ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা Jun 16, 2025
img
চলতি বছর থেকেই চালু হতে পারে রূপপুরের প্রথম ইউনিট Jun 16, 2025
img
ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধি দল Jun 16, 2025
img
বিএনপি দুর্বল নয়, এই দল পুলিশের ভোটে সরকার গঠন করতে চায় না: জি কে গউছ Jun 16, 2025
img
মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে নিয়ে এনসিপির শোকবার্তা Jun 16, 2025
img
ইসরায়েলের দিকে ছুটে যাচ্ছে ইরানের মিসাইল Jun 16, 2025
img
বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে ইরানের ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্রে Jun 16, 2025
img
‘দখলকৃত অঞ্চল ছাড়ো, এগুলো বাসযোগ্য থাকবে না’ Jun 16, 2025
img
ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ Jun 16, 2025
img
পিএসজির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত অ্যাতলেটিকো Jun 16, 2025
img
আরও বেদনাদায়ক জবাব অপেক্ষা করছে : ইরানের প্রেসিডেন্ট Jun 16, 2025