বিশ্ববাজারে বাড়ছে স্বর্ণ ও রুপার দাম

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার জেরে আবারও আলোচনায় ফিরে এসেছে স্বর্ণ। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে, আর তার প্রভাব পড়েছে দুবাইসহ আমিরাতের স্থানীয় বাজারেও। বিনিয়োগকারীদের ভরসার জায়গা হয়ে ওঠা স্বর্ণ এখন আবার নিরাপদ আশ্রয়ের তকমা পাচ্ছে। খবর গালফ নিউজের।

বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক মাস পিছিয়ে পড়েছে, এমন খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এরই ফলাফল স্বর্ণের দাম গত সপ্তাহে হঠাৎ বেড়ে ৩ হাজার ৪৪০ থেকে ৩ হাজার ৪৫০ মার্কিন ডলারের প্রতিরোধ অঞ্চলে পৌঁছে যায়, যদিও পরবর্তীতে তা কিছুটা কমে ৩ হাজার ৩৮০ ডলারে এসে স্থির হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, শুধু যুদ্ধ নয়, মার্কিন মুদ্রানীতি, বাণিজ্য পরিস্থিতি ও ডলারের দুর্বল অবস্থানও স্বর্ণের দর বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিশ্লেষক ড্যানিয়েলা সাবিন হ্যাথর্ন বলেন, ‘যদি ডলার দুর্বল হয় ও মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে, তাহলে স্বর্ণের দর আরও বেড়ে যেতে পারে।’

উল্লেখযোগ্যভাবে, দুর্বল ডলারের প্রভাবে দিরহামে স্বর্ণ কিনতে সুবিধা পাচ্ছেন আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। ফলে গয়নার দোকান থেকে শুরু করে স্বর্ণের বারের বাজারেও নতুন করে ক্রয়চাপ বাড়ছে।

বিশ্লেষক হ্যাথর্ন আরও বলেন, স্বর্ণের রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স (আরএসআই) ইতিবাচক অঞ্চলে ফিরে এসেছে, যা অদূর ভবিষ্যতে আরও দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে ৩ হাজার ৪৪০ ডলারের প্রতিরোধ ভাঙা এখনো চ্যালেঞ্জিং বলেও মত দিয়েছেন তিনি।

একই সময়ে রুপার বাজারেও কিছুটা গতি দেখা গেছে। জুনের শুরুতে রুপা কিছুটা উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখালেও সপ্তাহের মাঝামাঝি তা কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। কারণ বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে ফিরে এসে স্বর্ণের দিকেই নজর দিচ্ছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রুপা একদিকে মূল্যবান ধাতু, আবার অন্যদিকে শিল্পখাতে ব্যবহৃত, এ কারণে বিশ্ববাজারের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর রুপার দর অনেক বেশি নির্ভরশীল।

বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল ডলার ও মূল্যস্ফীতির ভীতির কারণে স্বর্ণের বাজার এখনো চাঙ্গা। এ অবস্থায় আমিরাতের ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি হতে পারে নতুন করে পরিকল্পনা করার সময়।

তবে সতর্ক করে হ্যাথর্ন বলেন, ‘আগের পারফরম্যান্স কখনোই ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা নয়।’ তবুও আপাতত বলা যায় স্বর্ণের ঝলক আবারও ফিরে এসেছে, রুপাও পিছনে ছুটছে।

আরআর/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠক শুরু Aug 19, 2025
img
১১ বগি রেখেই স্টেশনে ঢুকল ঢাকাগামী ট্রেন Aug 19, 2025
img
পরীমণির মেয়ে আইসিইউতে Aug 19, 2025
img
জনগণের সমস্যাকে নিজের মনে করেই সমাধান করব : আমিনুল Aug 19, 2025
img
মনোনয়নপত্রের সময় বাড়ানো ডাকসু নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র: ঢাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ Aug 19, 2025
img
খিলক্ষেত ফুটপাত ও ফুটওভার ব্রিজ দখলমুক্ত, জনজীবনে স্বস্তি Aug 19, 2025
img
এই সরকারের চেয়ে আগের সরকার ভালো, কখনো বলিনি : মাসুদ কামাল Aug 19, 2025
img
‘গত বছর এক দল উত্ত্যক্ত করেছে, এ বছর আরেক দল জুতা দিয়ে বরণ করেছে’ Aug 19, 2025
img
মাহিন সরকারকে এনসিপি থেকে বহিষ্কার Aug 18, 2025
img
থাইল্যান্ডের দুই চিকিৎসকের সেবা প্রদানে বিএমডিসির নিষেধাজ্ঞা আরোপ Aug 18, 2025
img
মিডিয়াকে বিশ্বাস করা বোকামি : সারজিস আলম Aug 18, 2025
img
বাবরের দলে ফেরার জন্য যে জায়গাগুলোতে মনোযোগ দিতে বললেন কোচ Aug 18, 2025
img
ট্যুরিস্ট ভিসায় মালদ্বীপে গেলে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যাবে না Aug 18, 2025
img
তিন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন জামায়াত সেক্রেটারি Aug 18, 2025
img
ডাকসু নির্বাচনে ‘মব’ সৃষ্টি করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদলের Aug 18, 2025
স্বতন্ত্র প্যানেল ঘোষণা করতে যাচ্ছেন উমামা ফাতেমা Aug 18, 2025
ইউক্রেনের ভূখণ্ড রাশিয়াকে দেওয়ার পরামর্শ ট্রাম্পের Aug 18, 2025
'আমাদের সন্তানরা ফিরে না আসা পর্যন্ত দাবি চালিয়ে যাব' Aug 18, 2025
img
শুটিং সেটে মা-বোন তুলে গালি দিতেন ফারাহ : আমিশা Aug 18, 2025
img
ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছাতে শুরু করেছেন ইউরোপীয় নেতারা Aug 18, 2025