ঈদে একইসঙ্গে দুই সিনেমা নিয়ে পর্দায় হাজির হয়েছেন জয়া আহসান। তাণ্ডব ও উৎসব; দুটি সিনেমা থেকেই পাচ্ছেন দারুণ সাড়া। ঈদের ছুটি কাটিয়ে ইতিমধ্যে অভিনেত্রী পাড়ি জমিয়েছেন কলকাতায়। সেখানে অংশ নিয়েছেন কৌশিক মুখার্জির ‘অর্ধাঙ্গিনী ২’ সিনেমার শুটিংয়ে।
এছাড়াও সেখানে মুক্তি পেতে যাচ্ছে অভিনেত্রীর আরেক সিনেমা ‘ডিয়ার মা’।
ঢালিউড, বলিউড কিংবা টলিউড সব ইন্ডাস্ট্রিই পুরুষশাসিত। সমাজব্যবস্থার প্রভাব ইন্ডাস্ট্রিতেও পড়ে বলে জানান দুই বাংলার জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী। আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জয়া আহসান বলেন, ‘যদিও এই সমাজব্যবস্থা কাম্য নয়।
আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে যতটা এ বিষয়ে সরব হওয়া যায় চেষ্টা করি।’
এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা যাকে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ বলি সেই সমাজকে কিন্তু অনেক নারীও সমর্থন করেন। তাঁরা পুরুষের চোখ দিয়ে সমাজকে দেখেন। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।
বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ— যেখানেই যান দেখতে পাবেন।’
এরপরই কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে ছবিতে গল্প বলা কমে যাওয়া এবং অভিনেতার সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়েও। সে বিষয়েও নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন জয়া।
অভিনেত্রীর ভাষ্যে, একজন সংস্কৃতিকর্মী হিসাবে স্বীকার করতেই হয়, গল্প বলার জায়গা কমে গেছে। অভিনেতারা সংখ্যায় কমে গেছি।
একই চেহারা বার বার দেখছেন দর্শক।
অভিনেতার সংখ্যা কেন কমে গিয়েছে? এমন প্রশ্নে জয়ার উত্তর, আমরা আসলে কেউ জায়গা ছাড়তে জানি না। আমাদেরকেও জায়গা ছাড়তে হবে। শর্টকার্ট রাস্তায় গিয়ে শিওর শট খেলার চেষ্টা করছি আমরা। আমি যে ছবি দুটো ছবি প্রযোজনা করেছি সেখানে দু’জন নতুন অভিনেত্রী এনেছি। আমাদের আরও চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।
কেউ একজন বেশ জনপ্রিয়, তার বক্স অফিস কালেকশন ভালো, তার মানে তাকেই নিতে হবে। এমনটাই যেন এখনকার অবস্থা।
জয়ার মতে, অভিনেত্রী আমাদেরই তৈরি করতে হবে। আমরা বক্স অফিস তৈরি করব। শুধুমাত্র পুরুষকেন্দ্রিক কাজ কেন হবে? সত্যিই কি মেয়েরা বক্স অফিসে কোনও প্রভাব ফেলেন না! তা হলে তো পুরুষেরাই একা কাজ করে ফাটিয়ে দিতেন।
নারীকেন্দ্রিক ছবি হোক। সেগুলোকে আরও বড় করে বানাক। দু’-তিন জন, চার জন অভিনেত্রী মিলে একটি ছবিতে অভিনয় করুন। টনিদার এই ছবিতে আমার একটি জিনিস ভালো লাগল, পটভূমিকায় বাংলাদেশ রয়েছে। বাংলায় কাজ। কিন্তু তিনি দক্ষিণ ভারত থেকে, মুম্বাই থেকে অভিনেত্রীদের নিয়ে এসেছেন। উনি সব সময় এই সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করেন। শুধু এই ছবিতে নয়, ওঁর প্রত্যেক ছবিতেই এই চেষ্টা থাকে। চুপচাপ এই কাজগুলোই করে যান। এটাই করা উচিত। মুখে বেশি কিছু না হলে আমাদের কাজ করে দেখানো উচিত।
সিনেমা প্রসঙ্গের বাইরে জয়া আহসান এসময় কথা বলেন সম্পর্ক, বিয়ে নিয়েও। তিনি বলেন, ‘এখন তো কেউ রিলেশনশিপেই যায় না! সিচুয়েশনশিপ... আর কী কী যেন আছে? এ সব ভাবনায় সব কিছুই আছে। শুধু রিলেশনশিপটাই নেই।
বিয়ে তো যেন ‘ওল্ড স্কুল’। যাই হোক, এই জিনিসগুলো আসবে। আবার ঘুরে আসবে। তবে পৃথিবীতে যত রকম মানুষ তত রকম সম্পর্ক। কোনও সম্পর্কই কোনও সম্পর্কের সঙ্গে মেলে না। আমার প্রত্যেকটি ফেলে আসা সম্পর্কও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেই সম্পর্কগুলো নিয়েই আজকের আমি। সব ঝেড়ে ফেলে দেওয়া যায় না। ভুলটুকুও তো আমার! সেটা মেনে সামনের দিকে চলা।’
উল্লেখ্য, আগামী ১৮ জুলাই কলকাতায় মুক্তি পাবে জয়া আহসান অভিনীত ‘ডিয়ার মা’। অনিরুদ্ধ রায় পরিচালিত এই ছবিতে আরো অভিনয় করেছেন শাশ্বত চ্যাটার্জি, ধৃতিমান চ্যাটার্জি, চন্দন রায়, অনুভা প্রমুখ।
পিএ/টিএ