পুরো পৃথিবীকেই শেষ করার যে অপশন রয়েছে নেতানিয়াহুর হাতে!

নেতানিয়াহুর দেশের হাতে রয়েছে এমন এক অপশন যা এক মুহুর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে গোটা পৃথিবীকে। আধুনিক বিশ্বের এই ভয়াল ও বিতর্কিত পরমাণু কৌশলের নাম ‘স্যামসন অপশন’। এই কৌশলটিই মূলত ইসরায়েলের পরমাণু নীতির কেন্দ্রবিন্দু, যার মূলমন্ত্র আত্মঘাতী হলেও শত্রুকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করা।

কৌশলটির নাম এসেছে হিব্রু বাইবেলের এক ঘটনাবলী থেকে। পবিত্র বাইবেল অনুসারে, স্যামসন ছিলেন একজন অতিমানবীয় শক্তির অধিকারী যোদ্ধা। শত্রুরা তাকে বন্দি করে নির্মম নির্যাতনের পর এক মন্দিরে আটকে রাখে। চূড়ান্ত মুহূর্তে স্যামসন সেই মন্দিরের স্তম্ভ আঁকড়ে ধরে ভেঙে ফেলে, নিজে প্রাণ হারান, কিন্তু শত্রুকেও শেষ করে দেন। এই প্রতিশোধের নীতিই আজ পরমাণু অস্ত্রে রূপ পেয়েছে তেলআবিবের স্যামসন অপশনে।

মূলত ১৯৬০-এর দশক থেকেই গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে থাকে তেলআবিব। যদিও বিশ্বের সামনে কখনোই তারা এই কথা স্বীকার করেনি। বিশ্বের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, তাদের কাছে বর্তমানে প্রায় ৮০ থেকে ৯০টি পরমাণু বোমা রয়েছে। শুধু বোমা নয়, আছে এসব ব্যবহারের উন্নত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য পরমাণু অস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলার ক্ষমতা।

যদি কেউ এই দেশকে ধ্বংসও করে দেয়, তাহলেও বেঁচে থাকা সাবমেরিন বা দূরবর্তী ঘাঁটি থেকে তারা পাল্টা হামলা চালাতে সক্ষম। সামরিক পরিভাষায় একে বলা হয় সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি। এই নীতির মূল বার্তা: "তুমি যদি আমাকে ধ্বংস করো, আমি তোমাকেও নিয়ে মরবো।"

এমন ঘটনার উদাহরন হিসেবে দেখা যায় উপসাগর যুদ্ধ। ১৯৯১ সালে ইরাক থেকে তেলআবিবের দিকে স্কাড মিসাইল ছোঁড়া হচ্ছিল। তখন সারা বিশ্ব উদ্বেগে ছিল, ইসরায়েল কি এবার ‘স্যামসন অপশন’ চালু করবে? যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তারা চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়নি, কিন্তু সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় ইসরায়েলকে সরাসরি আক্রমণ মানেই ভয়াবহ পরিণতি।

সমালোচকরা স্যামসন অপশনকে অভিহিত করেন “পাগলা কুকুরের শেষ কামড়” বলে। কিন্তু ইসরায়েলের মতে, এটি পাগলামো নয়, বরং এক বাস্তববাদী কৌশল। দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে দায়ান একবার বলেছিলেন, “আমাদেরকে এমনভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, যেন সবাই ভাবে এটা এক পাগল কুকুর যার দিকে তাকানোরও সাহস নেই।”

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইরান থেকে ট্রাম্পকে সরে আসার আহ্বান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর Jun 19, 2025
img
হাসপাতালে এমবাপে, বাড়ছে রিয়ালের দুশ্চিন্তা Jun 19, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসে ছাড়পত্র পেল ৩৮টি বাংলা সিনেমা Jun 19, 2025
img
মার্কিন হামলার গুজব উড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প Jun 19, 2025
img
ইউরোপীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে জেনেভায় আলোচনায় বসবেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Jun 19, 2025
img
নরমাল ডেলিভারির আশায় দুই মাস ধরে থাইল্যান্ডে স্বাগতা Jun 19, 2025
img
মীরসরাইয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল ৩ জনের Jun 19, 2025
img
'রানার মতো এক্সাইটিং পেসার হয়তো আগে কখনো দেখেনি বাংলাদেশ' Jun 19, 2025
img
আ. লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছবি থাকলে সদস্য পদ নবায়ন হবে না : আমিনুল Jun 19, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে জড়ানোর শঙ্কার মধ্যে পুতিন-শি জিনপিংয়ের ফোনালাপ Jun 19, 2025
img
নগরের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে রাজস্ব আদায়ে মনোযোগী হতে হবে : চসিক মেয়র Jun 19, 2025
img
বাঙালি সাজে নজর কাড়লেন কৌশানি Jun 19, 2025
img
দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত: তাহের Jun 19, 2025
img
ভালো আলোচনা চলছে কিন্তু কোনো বিষয়ে ঐকমত‍্য হচ্ছে না : মঞ্জু Jun 19, 2025
img
জালিয়াতি ধরা পড়ার পরও প্রভাষক পদে বহাল সালমা Jun 19, 2025
img
গোপন ভোট নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যে প্রস্তুত বিএনপি Jun 19, 2025
img
ইরান এখনও সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বের করেনি Jun 19, 2025
img
ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদিন আলোচনা হয়, জানালেন নেতানিয়াহু Jun 19, 2025
img
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হতে যাচ্ছে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার Jun 19, 2025
img
হিরো নয়, এবার ভিলেন চরিত্রে ঝড় তুলছেন টলিউড তারকারা Jun 19, 2025