ড. মুহাম্মদ ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্বকে জাতীয় নীতি আকারে গ্রহণ করা হয়নি। এই থ্রি জিরোকে ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য গণঅভ্যুত্থানটা হয় নাই। আমি ইউনূস ভাইকে অত্যন্ত আন্তরিকতারা সঙ্গে বলছি কথাটা, এটা তার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে। এই বাজেটে তারা বলছে, তারা থ্রি জিরো বাস্তবায়ন করবে।কিন্তু এটার জন্য আমরা গণঅভ্যূত্থানটা করি নাই।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি এন্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত বাজেট সংলাপ ২০২৫-এ এসব কথা বলেন কবি ও রাষ্ট্র চিন্তক ফরহাদ মজহার।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছি ভিন্ন ধরনের বাজেট। যেখানে লুটপাটতন্ত্রকে অবৈধ বলা হবে।
এটা পেলেই যথেষ্ট। আর তার যে থ্রি জিরো তত্ত্ব সে সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য আছে আলাদা। সেটা আমরা আলাদা করবো। এটা একটা ব্যক্তির স্বপ্ন।
আমরা এটার প্রসংশা করি। কিন্তু আমাদের কথা তার এই তত্ত্ব বাজেট প্রস্তাবনায় কেন? আন্তর্জাতিকভাবে এটার খ্যাতি থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে এই তত্ত্ব সঠিকভাবে নেই। এটা আলোচনার অধিকার আমাদের আছে। তাকে অসম্মান করার জন্য বলছি না, তবে এটা যদি তিনি বাজেটে প্রবেশ করান তাহলে তিনি অসম্মানিত হবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচিত সরকার, তবে অন্তর্বর্তী বটে।
কিন্তু নির্বাচিত, অনির্বাচিত না। আমাদের লুটেরা-মাফিয়াতন্ত্রওয়ালারা বলে এটা অনির্বাচিত সরকার। এটা নির্বাচিত সরকার; এটা আমরা মেনে নিয়েছি কেন? যেহেতু আমরা মনে করি জনগণ তাদের এটা দিয়েছে। কাজেই এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি মনে করি এই বাজেটটা আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ সন্তুষ্ট করতে পারে নাই। যে স্পিরিটটা আমরা বাজেটে দেখতে চেয়েছি সেটা আমরা দেখি নাই। এটা একান্তই একটা পুরোনো টেকনোক্র্যাটিক এক্সারসাইজ মনে হয়েছে। লুটপাট তন্ত্রের সবচেয়ে দৃশ্যমান বিষয় হলো কালো টাকা সাদা করা। অবশ্যই এটাকে সংশোধন করতে হবে। কালো টাকা এখন সাদা হয় কোন যুক্তি? গণঅভ্যুত্থানের পরে এটা করবার কোন যুক্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাজেটে সেনাবাহিনীর জন্য আমরা কিভাবে খরচ করি, প্রতিরক্ষা জন্য তার কোন স্পষ্ট উল্লেখ নাই৷ এটা হতে পারে না। অবশ্যই আমাকে জাতীয় প্রতিরক্ষা একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর তা গড়ে তুলতে হলে তার জন্য আমার খরচ আছে। এটা একটা ন্যায্য খরচ। সেই খরচ আমি কোথা থেকে তুলবো, কে দেবে? এটা তো একটা থাকতে হবে, যে টাকাটা কোথায় খরচ হচ্ছে?’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘লুটেরা শ্রেণি আমলাতন্ত্রকে বহাল রাখার জন্য তাদের টাকার একটা অংশ পরে খরচ করে। এখন আবার দেখবেন যে, গণঅভ্যুত্থানের পরে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার নামে আমলাতন্ত্রকে রেখে দেয়। একটা ছোট্ট শব্দ সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা। তারা বলে, এটা রাখতে হবে, এর নামে আমলাতন্ত্রকে রেখে দেয়।
এফপি/ এসএন