ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে কারাভোগ শেষে ১৪ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন- মো. ইসমাইল, হারুন মজুমদার, পাপিয়া আক্তার, লিজা খানম, লিজা খাতুন, আশা মণি, মফিজুল ইসলাম, তাহিয়াতুন নেসা, আখি ইসলাম, সঞ্জয় সরকার, স্বপন সরকার, যিশু কান্তি দাস, বিপুল দাস ও সুশেন দাস। তাদের বাড়ি ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, চাঁদপুর, খুলনা, নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
ফেরত আসাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো খুলনার মহারাজপুর উপজেলার মফিজুল ইসলাম ও তাহিয়াতুন নেছা দম্পতি, যারা মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে দালালের সহায়তায় ২১ মাস বয়সী কন্যাসন্তান আখিকে সঙ্গে নিয়ে কাজের আশায় খাগড়াছড়ির পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।
তবে প্রবেশের দিনই ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন তারা। সেখানে ছয় মাস কারাগার ও পরবর্তীতে চার মাস আগরতলার নরসিংঘর হোম সেন্টারে থেকে অবশেষে দেশে ফিরেছেন। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমীন জানান, ফেরত আসা ব্যক্তিদের পরিবারের অনুরোধে ব্র্যাক পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চালায়। আগরতলার হোম সেন্টারে অবস্থানরত অবস্থায় তাদের আর্থিক সহায়তা ও জরুরি খাদ্যসামগ্রীও সরবরাহ করে ব্র্যাক। পরবর্তীতে তাদের পূর্ণ পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলার অ্যাসিস্ট্যান্ট ওমর শরীফ জানান, আগরতলায় আরও ৩৩ জন বাংলাদেশি আটক রয়েছেন যাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ রোধে দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় ও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা দালালের প্রলোভনে পড়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে শিকার হন হয়রানি ও কারাদণ্ডের। তাই তারা সকলকে সতর্ক করে বলেন- কোনোভাবেই যেন কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে বিদেশে পাড়ি না জমান।
আরএম