আমেরিকার সিদ্ধান্ত যাই হোক, ইরানের বিরুদ্ধে একাই লড়ার ঘোষণা ইসরায়েলের

ইরানের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ করতে এবার একক পথে হাঁটার ঘোষণা দিল ইসরায়েল। বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, ইরানের পরমাণু ঘাঁটি ধ্বংস করতে তারা প্রস্তুত—এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের বিবৃতি প্রকাশের পর ইসরায়েলের এই অবস্থান সামনে আসে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্ত হবেন কি না, সেই বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট।

ক্যারোলিন লিভিট আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কূটনৈতিক সমাধানে বিশ্বাসী হলেও প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করতে তিনি পিছপা হবেন না। তার ভাষায়, "প্রেসিডেন্ট সব সময় শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহী। কিন্তু যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তিনি প্রস্তুত।"

এমন অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পর নেতানিয়াহু জানান, “আমরা ইরানের পরমাণু ঘাঁটি ধ্বংস করবই। আমাদের সেই সামর্থ্য রয়েছে। এর ফলে ইরানের শাসক গোষ্ঠীর পতন ঘটবে কিনা, তা সে দেশের জনগণের সিদ্ধান্ত।”

তিনি আরও বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেবেন কি না, সেটি তার একান্ত সিদ্ধান্ত। তিনি আমেরিকার স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। আর আমরা ইসরায়েলের স্বার্থ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।”

এর আগে, ইরানকে "পরমাণু বোমার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়া" বলে আখ্যায়িত করে ইসরায়েল হামলা শুরু করে। তেহরানে একের পর এক সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু স্থাপনা এবং বিজ্ঞানীদের ওপর হামলা চালানো হয়। পাল্টা জবাবে ইরানও মিসাইল হামলা চালায় ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে।

পরিস্থিতি যতই উত্তপ্ত হোক, এখনো পর্যন্ত মার্কিন প্রশাসন সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়নি। তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প নাকি ইরানে হামলার পরিকল্পনায় মৌখিক সম্মতি দিয়েছেন, যদিও এখনই সরাসরি হামলার পক্ষে নন তিনি।

মার্কিন অবস্থান পরিষ্কার নয়, তবে ইসরায়েল স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা একাই ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যে বড় ধরনের সংঘাত আসন্ন, তার ইঙ্গিত মিলছে প্রতিটি বক্তব্যেই।

এসএম/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাদ লাবুশানে, স্মিথকে ছাড়া প্রথম টেস্টে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া Jun 21, 2025
img
নেতানিয়াহুর দেশে হামলার ছক, নতুন মিলিশিয়া গড়তে ইরানের কাছে বিপুল অর্থ চাইল সিরিয়া! Jun 21, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও অন্তত ৮২ জনের Jun 21, 2025
img
‘ইসরায়েলের বিচার করে’ কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত ইরান: আব্বাস আরাগচি Jun 21, 2025
img
তোমার বুকে ডুব দিয়ে বুঝেছি, গোটা পৃথিবী জয় করে ফেলেছি : চমক Jun 21, 2025
img
প্রায় ১৩.৯ বিলিয়ন ডলার সম্পদ একশ’র বেশি সন্তানকে ভাগ করে দেবেন টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভ Jun 21, 2025
img
নেতানিয়াহুর দেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি ‘স্পষ্ট অবজ্ঞা’ দেখিয়েছে: জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত Jun 21, 2025
img
অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই গিলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি Jun 21, 2025
img
বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পুশ ইন করছে ভারত : মির্জা ফখরুল Jun 21, 2025
img
৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইরান Jun 21, 2025
img
ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুকে গুপ্ত হত্যার চেষ্টা করছে ইরান, অভিযোগ ইসরায়েলের Jun 21, 2025
img
'গাজায় ৭০০ হাসপাতালে হামলা করে, ইসরায়েল আজ তাদের হাসপাতালে ক্ষতির অভিযোগ করছে' Jun 21, 2025
img
অভিনেত্রী দীঘির নীল-সোনালী গাউনে মুগ্ধ ভক্তরা Jun 21, 2025
img
আমির খানের ছেলেকে ধাক্কা দিলেন সালমান খানের বডিগার্ড, ভিডিও ভাইরাল Jun 21, 2025
img
ইরানের সঙ্গে ‘দীর্ঘ যুদ্ধের’ প্রস্তুতি নিতে বললেন ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির Jun 20, 2025
img
কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ নেতা এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক Jun 20, 2025
img
নাটোরে বাস ও অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রাণ গেল ৪ জনের Jun 20, 2025
img
ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে না যাওয়ার কারণ জানালেন মোদি Jun 20, 2025
img
‘বৃষ্টিকে আমার আর ভালো লাগে না’ Jun 20, 2025
img
ইরানের পর এবার পাকিস্তানকে হুমকি ইসরায়েলের সাবেক মন্ত্রীর Jun 20, 2025