জীবনের অন্যতম বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে হলিউড তারকা জনি ডেপ আবার মুখ খুলেছেন। সাবেক স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার পর ক্যারিয়ারে কী প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমসে বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়েছেন এই অভিনেতা।
সেখানে তিনি দাবি করেন, যৌন হয়রানি, নির্যাতন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে নারীদের সামাজিক আন্দোলন ‘মি টু’র ভুল টার্গেট হয়েছিলেন।
৬২ বছর বয়সী ডেপ বলেছেন, ‘আমি ছিলাম ‘মি টু’ আন্দোলনের পরীক্ষামূলক বলি। এটা হার্ভে ওয়াইনস্টিন কাণ্ডেরও আগে। আমি সবকিছু নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলাম।"
ডেপ অভিযোগ করেছেন, হলিউডের এমন অনেক মানুষ, যাদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল তার কঠিন সময় পাশে না দাঁড়িয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। ‘তিনজনের কথা মনে পড়ছে যারা আমার সন্তানদের জন্মদিনে উপস্থিত ছিলেন, বাচ্চাদের কাঁধে করে খেলাচ্ছিলেন।
অথচ পরে তারাই আমার পেছনে ছুরি মেরেছেন। ওদের ভয় ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার’- বলেন অভিনেতা।
জনি ডেপ জানান, তিনি তিন দশক ধরে একজন এজেন্টের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেই এজেন্ট পরে আদালতে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এভাবে মানুষের বদলে যাওয়া দেখে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি আশা হারাননি। সত্যের জয় হবে সেই প্রত্যাশাই তাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী রেখেছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, সারা দুনিয়াও যদি মিথ্যেকে সত্য বলতে চায় তবে সেটা কখনো হবে না।
তার ভাষায়, ‘ওদের চোখে আমি ‘কঠিন’ ছিলাম। সেটা কোনো বিচার নয় বরং তারা সামনাসামনি গালি না দিয়ে পেছনে কথা বলে, বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাকে ধ্বংস করেছে। তারা শুধু অর্থ চায়।’
ডেপ আরও বলেন, ‘আমি এমন মানুষ, যার প্রতি বিশ্বস্ততা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার মতো নয়। কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমি দেখেছি কারা নিজের সুবিধার জন্য নিরাপদ খেলেছে, কারা মুখে কিছু আর কাজে অন্য কিছু করেছে।’
২০১৭ সালে ডিভোর্সের পর অ্যাম্বার হার্ড জনি ডেপের বিরুদ্ধে পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগ তোলেন। পরে ২০১৮ সালে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে একটি মতামত কলামে ‘পারিবারিক সহিংসতার শিকার একজন নারী’ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন হার্ড। যদিও সেখানে জনি ডেপের নাম উল্লেখ ছিল না।
এই লেখার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ডেপ ভার্জিনিয়ার একটি আদালতে মানহানির মামলা করেন। বিচারক ডেপের পক্ষে রায় দেন, যদিও হার্ডের পাল্টা অভিযোগের একটি অংশে তিনিও ক্ষতিপূরণ পান। পরে দুইজনই একে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে সমঝোতায় পৌঁছান। হার্ড জনি ডেপকে ১০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেন।
আদালতের রায়ের পর ডেপ বলেছিলেন, ‘জুরি আমার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। সত্য বলা ছিল আমার দায়িত্ব। আমার সন্তানদের জন্য আমি লড়তে চেয়েছি যারা বরাবর আমার পাশে থেকেছে।’
এদিকে অ্যাম্বার হার্ড বলেছিলেন, ‘এত প্রমাণ থাকার পরও সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটাই হৃদয়ভাঙার মতো ব্যাপার। রায়টি নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে যে সচেতনতা তৈরি হচ্ছিল, সেটিকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে।’
কেএন/এসএন