অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে একটা ‘পিকুলিয়ার সিনড্রোম’ (উদ্ভট লক্ষণ) দেখতে পাচ্ছি। আমি বলব একটি নতুন ধরনের কুম্ভকর্ণ ‘সিনড্রোম’, দেখা যাচ্ছে, অর্থাৎ ‘শোনে কিন্তু সাড়া দেয় না’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান।
রোববার (২২ জুন) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)- এর আয়োজনে বাজেট নিয়ে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের রেগে যাওয়ার সময় হয়েছে। এটি অযৌক্তিক রাগ নয়। আমি এটাকে বলব পবিত্র রাগ। যে রাগের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন করতে হয়। এখনই রেগে যাওয়ার মুহূর্ত হয়েছে। অনেকে বলছেন বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে চারজন অর্থনীতিবিদ রয়েছেন। তারপরও কেন গতানুগতিক বাজেট হলো। আমি মনে করি উপদেষ্টা পরিষদের সবাই অর্থনীতিবিদ হলেও ব্যতিক্রম কিছু হতো না। কারণ বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে যে সাহস দেখাতে হয় সেটির জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।'
তিনি বলেন, ‘গায়েবি মামলার সংস্কৃতি দেশের পুরো ব্যবসা পরিমণ্ডলকে এক ধরনের গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। এতে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এটার পরিবর্তন আনার জন্য অর্থ উপদেষ্টা বাজেটে কিছুই রাখেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগের স্থবিরতা কাটাতে শুধু অর্থ মন্ত্রণালয় নয়, পুরো সরকার ব্যবস্থাকেই কাজ করতে হবে। স্বরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিচার বিভাগসহ প্রতিটি মন্ত্রণালয় যদি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে হবে না।’
সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এনামুল হক খান, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ ও বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘শুধু আকারে ছোট হয়েছে, এদিক থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটটি ব্যতিক্রম। বাজেটে মানুষের জন্য যেসব উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপের আলোচনা নেই। সার্বিকভাবে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দিকনির্দেশনা দিতেও বাজেট ব্যর্থ হয়েছে।’
এসব বিবেচনায় তিনি প্রস্তাব দেন প্রস্তাবিত বাজেটটি আগামী ছয় মাস পরে মধ্যবর্তী পর্যালোচনা করার।
কেএন/এসএন