ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনে কানাডার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য কানাডার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ (সোমবার) দুপুরে মগবাজারে দলের কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান।

তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও কানাডার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। বৈঠকে হাইকমিশনারের সঙ্গে সিনিয়র পলিটিক্যাল অফিসার সিওভান কের ও পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক অ্যাডভাইজার নিসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্ব বৈঠকে অংশ নেন দলের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।

ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, বৈঠকে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুরোধ করেছি। তারা সেটিতে সম্মত হয়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচন ও যে রিফর্ম (সংস্কার) হচ্ছে সে ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্বে যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে। প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় পথ ও মতের ভিত্তিতে কাজ করছি। কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অগ্রগতিও হয়েছে। আর্টিকেল ৭০, স্ট্যান্ডিং কমিটির কথা বলেছি। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছি। নারী আসনের ব্যাপারে কথা হয়েছে। সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেছি। জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা চায়, সেটা আমরা ব্যাখ্যা করেছি। আপার ও লোয়ার হাউজ সংক্রান্ত যে কনডিশনাল অগ্রগতি হয়েছে সেটা আমরা ব্যাখ্যা করেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেসিক একটা চেঞ্জ দরকার। পাওয়ারকে ব্যালেন্স করবে, কোনো একজন ব্যক্তিকে একনায়ক বা স্বৈরশাসক বা ডিক্টেটর হওয়ার মতো অবস্থায় যেতে না পারে সেজন্য ১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। একটি দলের পক্ষ থেকে আপত্তি আসছে। তারা দলীয়ভাবে পরে তাদের অবস্থান জানাবেন।

‘বাংলাদেশে আজকের পরিস্থিতির জন্য যে প্রধান কারণ সেটা হচ্ছে ভোটারবিহীন জবরদখলের নির্বাচন। পরপর তিনটি নির্বাচনই ছিল এমন। যার কারণে সংকট এমনভাবে ঘনীভূত হয়েছে যে, একটি সরকারের শুধু পরিবর্তনই হয়নি, বিদায় হয়নি, দেশত্যাগ করার মতো একটি পর্যায়ে চলে গেছে। আমরা আর দেশে এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি চাই না, সেটা স্পষ্ট করে বলেছি।’

জামায়াতের এ শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, আমরা বলেছি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে একটি ফ্রি ফেয়ার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। যার মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা ও সুস্থ রাজনীতি ফিরে আসবে। যদি এটা এবার না-হয় তাহলে আগের চেয়েও বড় ও ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা হতে পারি, সেই আশঙ্কার কথা আমরা তুলে ধরেছি।

‘বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং বলেছেন, তারা এবার বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ক্লোজলি অবজার্ভ করবে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সামনে আলাপ করবে। নির্বাচনের আগেই যাতে লেবেল ফিল্ড থাকে এবং নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয় এ ব্যাপারে তারা তাদের অবজারভেশন ও মতামত দেবেন।’

মো. তাহের বলেন, আমরা আরেকটা কথা বলেছি, যেখানে সিল মারা হবে সেটা বাদে প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য। এজন্য অনেক টাকাও লাগবে এটা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অজুহাত- এতো টাকা ও বাজেট পাবো কোথায়! আমরা কানাডাকে অনুরোধ করেছি সেই বাজেট দেওয়ার জন্য। একটি দল বা দেশ যদি বাজেট দিতে না পারে তাহলে আপনারা কয়েকটি দেশ কনসোর্টিয়াম করে ইউএনডিপির মাধ্যমে এই বাজেট দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন। তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে। কানাডার হাইকমিশনার আর্থিক অনুদানের বিষয়টি জাতিসংঘের মাধ্যমে সমন্বয় করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

কানাডা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ করা হয়।

আরআর/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

জয়া-রুনাকে নিয়ে চুমকির বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নেটপাড়ায় Dec 14, 2025
দুই বছর অপেক্ষার পর ধামাকা এন্ট্রি দিয়ে ফিরলেন ফারিয়া Dec 14, 2025
সমুদ্রসৈকতে মিমের আবেদনময়ী লুক নেটমহলে তোলপাড় Dec 14, 2025
মেসির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন মমতা ব্যানার্জি Dec 14, 2025
img
‘প্রতি সপ্তাহে কোরিয়া যাই’- ফের আলোচনায় তান্যা মিত্তল Dec 14, 2025
img
শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা : প্রধান উপদেষ্টা Dec 14, 2025
img
হানিমুন শেষে উচ্ছ্বসিত সামান্থা, স্বামীর সঙ্গে খুনসুটির মুহূর্ত ভাইরাল Dec 14, 2025
img
মায়ের পদবি নয়, নিজের নামেই অন্বেষা Dec 14, 2025
img
মেসিকে না দেখার ক্ষোভে উত্তাল জনতা, উদ্যোক্তাকে তোপ টলিউডের Dec 14, 2025
img
অপরাধের রাজনৈতিক ট্যাগ প্রকৃত আসামিকে আড়াল করে : তাহেরি Dec 14, 2025
img
খালেদা জিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তী : কবীর ভূইয়া Dec 14, 2025
img
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবিচল সাহস দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় : রাষ্ট্রপতি Dec 14, 2025
img
প্রথম ডেটে সারারাত পিয়ানো বাজিয়েছিলেন বীর, নায়িকার মন্তব্য Dec 14, 2025
img
হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র : শেখ বাবলু Dec 14, 2025
img
হাদিকে গুলি করা দুর্বৃত্ত গোয়েন্দাদের নজরে! Dec 14, 2025
img
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের দুঃখ প্রকাশ Dec 14, 2025
img
চট্টগ্রামে সোমবার অনুষ্ঠিত হবে হৃদরোগ কনফারেন্স Dec 14, 2025
img
ঢাকা বিভাগের ইজতেমায় ক্রিকেটার মিরাজ Dec 14, 2025
img
অন্যের হাসিতেই জীবনের পরম সার্থকতা দেখেন গায়িকা Dec 14, 2025
img
পার্শ্ববর্তী দেশের উস্কানিতে আ.লীগের দালালরা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চালাচ্ছে : খোকন Dec 14, 2025