তারা হলেন 'চাইল্ডহুড সুইটহার্ট'। সেই কলেজ বেলার প্রেম। যা গড়ায় বিয়েতে। এক সন্তান নিয়ে ভরা সংসার। কথা হচ্ছে আবীর চট্টোপাধ্যায় ও স্ত্রী নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়ের।
সেই শুরু থেকে নন্দিনীকে নিয়ে নানা মন্তব্য। তার 'লুক' আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে মাঝেমধ্যেই। দু'জনের মধ্যে বোঝাপড়া, ভালোবাসা, ভালো থাকা হয়ে ওঠে গৌণ।
আবিরকে উচ্চাসনে বসিয়ে মাঝেমধ্যেই কমেন্ট আসে, 'ভালোবাসা রূপ দেখে হয় না'। এতে যে আখেরে নন্দিনীকে অসম্মান করা হয়, তা হয়তো টেরও পান না অনেকেই।
সদ্য সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। তবে এবার প্রতিবাদটা শুধু আবিরের ভক্তদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রইল না। ফুঁসে উঠলেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী, যিনি নিজেও অসুস্থতার কারণে ওজন বাড়ায় হয়েছে কটাক্ষের শিকার। কী ঘটেছে?
সম্প্রতি শহরের এক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আবির ও নন্দিনী। সেই ভিডিওই প্রকাশ পেয়েছিল বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে। এরকমই এক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই শুরু হয় নন্দিনীকে ঘিরে চর্চা। সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক মন্তব্যে নন্দিনীর রূপ নিয়ে শুরু হয় কাটাছেঁড়া।
বিষয়গুলো দেখে আর চুপ থাকেননি ঋতাভরী। ওই ভিডিওরই কমেন্ট বক্সে তিনি লেখেন, "আমরা কেন যে 'ফাটাফাটি' ছবিটা বানিয়েছিলাম, এই কমেন্ট সেকশনই তা বলে দিচ্ছে।'
পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ফাটাফাটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ঋতাভরী। বিপরীতে ছিলেন আবির। 'মোটাদের জন্য ফ্যাশন নয়', 'আর কত খাবি', 'স্টেজে উঠলে ভেঙে যাবে' -- ইত্যাদি নানা সমালোচনার বিরুদ্ধেই আওয়াজ তুলেছিল এই ছবি। বার্তা দিয়েছিল, 'বডি পজেটিভিটির'।
ঋতাভরীকে একজন মনে করিয়ে দেন, কমেন্ট সেকশনে পুরুষদের থেকে বেশি মহিলারাই আবিরের স্ত্রীর শরীর নিয়ে নোংরা মন্তব্য করছেন। অভিনেত্রী যোগ করেন, "মেয়েরা লিখলেও ভুল। কারও অ্যাপিয়ারেন্সের ভিত্তিতে কাউকে বিচার করা উচিৎ নয়। যেই শরীর নিয়ে কাউকে বাঁচতে হচ্ছে না, তার সেই শরীর নিয়ে মতামত কেন ভাই।"
তার কথায়, "এই সমাজ একসময় সতীর নামে পুড়িয়েছে। পড়াশোনা করতে দেয়নি। কিন্তু সময় লাগলেও সম্বিত ফিরেছে। আশা করি, এ ক্ষেত্রেও মানুষের চৈতন্য হবে।"
আবির ও নন্দিনীর সুখের সংসার। নন্দিনী উচ্চশিক্ষিত, উচ্চপদস্থ। তা সত্ত্বেও বারেবারেই তার বাহ্যিক রূপ নিয়ে চর্চা। বারেবারে প্রতিবাদ হলেও তা থামার নয়! প্রশ্ন একটাই, এর শেষ কোথায়?
আরআর/এসএন