গুম কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদন, উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

গুমের পর শুধু ক্রাসফায়ার নয়, গুলি করে নদীতেও ফেলা হয়েছে মরদেহ। হত্যা করা হয়েছে ইনজেকশন পুশ করে। ইটের ভাটা, ট্রেন বা যানবাহনের নিচে ফেলেও হত্যা করা হয়েছে। গুম কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

আওয়ামী লীগ শাসনের ১৫ বছরে দেশে সংগঠিত গুম নিয়ে দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের চ্যাপ্টার ছয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে যন্ত্রণা, দ্বন্দ্ব, মতবিরোধকে তুলে ধরেছে কমিশন।

গুম করতে অস্বীকৃতি জানানো কিংবা ভুক্তভোগীকে সহায়তা করেছেন এমন কর্মকর্তাদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, প্রতিবাদ জানানোয় রোষালনে পড়েছিলেন তারা। উল্টো প্রমোশনসহ নানা সুবিধার জন্য জঙ্গির নাটক সাজিয়েছেন অনেকে।

এ বিষয়ে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তারা এটা মেনে নিতে পারছিলেন না। কিন্তু নিরূপায় ছিলেন। তাদেরকে বাধ্য করা হত। তারা বাধ্য হয়েছেন, কারণ তাদের চাকরির ব্যাপার, জীবনের নিরাপত্তা এবং পারিবারিক নিরাপত্তার ব্যাপার ছিল।

এছাড়া তিনি জানান, তদন্তে কমিশন জানতে পারে যে ইনজেকশন পুশ করেও হত্যা করা হয়েছে গুমের শিকারদের। পরে মরদেহ গায়েব করতে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে ইট ভাটায়। ট্রেন ও বাসের নিচেও ফেলে সাজানো হয়েছে দুর্ঘটনার নাটক।

তিনি আরও জানান, গুম নিয়ে বাহিনীর অনেকের মধ্যে অস্বস্তি থাকলেও কেউ কথা বলার সাহস করতে পারেনি। কারণ, তিন স্তরে গুম বাস্তবায়নের শীর্ষে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দ্বিতীয় স্তরে গোয়েন্দাবাহিনীর প্রধানরা। আর তৃতীয় স্তরে বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বরতরা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকর বলছেন, গুমের সংস্কৃতি চিরতরে বন্ধে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আমিনুল করিম বলেন, গুম কমিশন এখনও কাজ করছে বলে জানি। বেশ ভালো কাজ করছে। তাই তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তাদেরকে আরও ভেতরে যাওয়া উচিত। এমন জঘন্য কাজ জেন আরও পুনরাবৃত্তি না হয়।

কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এখনও আগের মতোই দায়মুক্তির সংস্কৃতি এবং পূর্ববর্তী কাঠামো বহাল রয়েছে, যা তদন্তে বাধা তৈরি করছে।  

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পারমাণবিক কর্মসূচি পুনর্গঠনে কাজ করছে ইরান : মোহাম্মদ ইসলামি Jun 24, 2025
img
কাতারকে ধন্যবাদ জানাল ইরান Jun 24, 2025
img
হানিয়া আমিরকে নিয়ে ছবি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিলজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ Jun 24, 2025
img
বিদেশে এস আলমের নামে থাকা সম্পদ জব্দের নির্দেশ Jun 24, 2025
img
‘মিস্ত্রি’ ছবির প্রচারে থাকছেন না রাম কাপুর! Jun 24, 2025
img
অক্টোবরের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করবে সরকার : সাখাওয়াত হোসেন Jun 24, 2025
img
বিদেশি ঋণের বড় অংশই চলে যাচ্ছে দেনা শোধে : শিক্ষা উপদেষ্টা Jun 24, 2025
img
টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার আইনজীবী বাংলাদেশকে ছোট করছেন : দুদক Jun 24, 2025
img
ফ্যাসিবাদের জায়গা বাংলাদেশে আর হবে না : এ্যানি Jun 24, 2025
img
যেভাবে বাংলাদেশ থেকে গুগল পে ব্যবহার করা যাবে Jun 24, 2025
img
সড়কে সুরক্ষা নিশ্চিতে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ চায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন Jun 24, 2025
img
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে ৩৬ দিনের অনুষ্ঠানমালা ঘোষণা সরকারের Jun 24, 2025
img
ইরানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে কাতার Jun 24, 2025
img
পিনাকী ভট্টাচার্যের ‘বিশেষ ঘোষণা’ Jun 24, 2025
img
ডিএসসিসি ভবনে ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২ Jun 24, 2025
img
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন হল প্রভোস্টরা Jun 24, 2025
img
বৈঠকের প্রস্তাবে ইরানকে চিঠি দিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা Jun 24, 2025
img
বাবা হতে চলেছেন নোবেল Jun 24, 2025
img
একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন Jun 24, 2025
img
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এনপিটি থেকে বেরিয়ে যেতে পারে ইরান Jun 24, 2025