জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থাপিত ব্যাখ্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি এই ব্যাখ্যাকে আইনিভাবে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেন।
চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলাকে ‘অবৈধ এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করে ইরান। একইসঙ্গে জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আওতায় আত্মরক্ষার অধিকার দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের হত্যা’ বলে অভিহিত করা হয়।
চিঠিতে ইরাভানি বলেন, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাধারণ সম্মেলনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যে কোনও ধরনের হামলা কিংবা হামলার হুমকি আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সংস্থাটির বিশ্বাসযোগ্যতা ও যাচাই প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করে।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাযা কাল্লাসও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এর আগে, বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, যে কেউ বলপ্রয়োগ করলে তাকে আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে ন্যায়সঙ্গতভাবে তা ব্যাখ্যা করতে হবে। হামলাটি আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে কতটা বৈধ, এই প্রশ্নের জবাবে কায়া কাল্লাস বলেন, ‘‘শতভাগ বৈধ বলা যায় না।’’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনা ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) পরিচালক জন র্যাটক্লিফ।
তিনি বলেছেন, এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তেহরানের কয়েক বছর সময় লাগবে। তবে মার্কিন হামলায় ইরানের সম্পূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস হয়েছে বলে কোনও দাবি তিনি করেননি।
সিআইএ পরিচালকের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন পেন্টাগনের একটি গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁস হওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পরও ইরানের মূল পরমাণু সক্ষমতা বহাল আছে।
সূত্র: বিবিসি।
কেএন/টিকে