ইরানকে আবারও আঘাত করলে ‘চড়া মূল্য দিতে হবে’, ট্রাম্পকে কড়া বার্তা খামেনির

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও ইরানের ওপর হামলা চালায়, তবে তাকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে দেওয়া এই হুঁশিয়ারি আসে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তার প্রথম প্রকাশ্য ভাষণে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় খামেনি বলেন, “আমরা আমেরিকার মুখে চপেটাঘাত করেছি।” ৮৬ বছর বয়সী এই ধর্মীয় নেতা গত ১৯ জুনের পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখলেন। তবে আগের চেয়ে তাকে ক্লান্ত ও বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।

খামেনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র কেবল তখনই যুদ্ধের মধ্যে হস্তক্ষেপ করেছিল, যখন তারা বুঝতে পেরেছিল, যদি হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে জায়নিস্ট শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।”তার ভাষ্যমতে, “এই যুদ্ধ থেকে আমেরিকা কোনো সুবিধা আদায় করতে পারেনি। ইসলামি প্রজাতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে এবং প্রতিশোধ হিসেবে আমেরিকার মুখে চপেটাঘাত দিয়েছে।”

তিনি ইঙ্গিত দেন, সোমবার কাতারে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথাই হয়তো তিনি বলছেন, যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

খামেনি আরও বলেন, “এই ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতেও পুনরাবৃত্ত হতে পারে।” তিনি দাবি করেন, ইরানের কাছে অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন কেন্দ্রগুলোর অবস্থানসংক্রান্ত তথ্য রয়েছে এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে।

তিনি বলেন, “যদি কোনো আগ্রাসন হয়, তাহলে শত্রুকে অবশ্যই তার চড়া মূল্য দিতে হবে।”১৩ জুন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এরপর খামেনি গোপন কোনো আশ্রয়ে চলে যান এবং আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনায় বাংকার-ব্লাস্টার বোমা দিয়ে হামলা চালায়। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয় মঙ্গলবার থেকে।

বৃহস্পতিবার খামেনি তার ভিডিও ভাষণে আগের মতোই সাধারণ বাদামি পর্দার সামনে বসে বক্তব্য দেন, যেটি অনেকটাই ১৯ জুনের ভাষণের অনুরূপ ছিল।

এই ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আবারও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রশ্নে নিজের দেশের প্রতিরক্ষাগত প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেন। তাঁর এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আরএম 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ঢাকায় ফিরল বিমান Jun 27, 2025
img
রেলের জমি থেকে মণ্ডপ সরানো নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে : রেল উপদেষ্টা Jun 27, 2025
img
রিয়ালের নকআউট নিশ্চিত ভিনিসিয়ুসের নৈপুণ্যে Jun 27, 2025
img
২৯তম বিসিএসে ভুয়া ক্যাডার ২১ জন, অনুসন্ধানে দুদক Jun 27, 2025
img
ঢাকার বাতাস আজ সহনীয় পর্যায়ে Jun 27, 2025
img
আজ থেকে রথযাত্রা উৎসব শুরু Jun 27, 2025
img
চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র আশুরা ৬ জুলাই Jun 27, 2025
img
চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা বহিষ্কার Jun 27, 2025
img
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শ্লোগানে বামজোটের রোডমার্চ আজ Jun 27, 2025
img
ইরানকে আলোচনায় ফেরাতে ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের Jun 27, 2025
img
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৫৪ হাজার ৩৯৭ হাজি Jun 27, 2025
img
ভারতের সঙ্গে বড় বাণিজ্য চুক্তির ইঙ্গিত ট্রাম্পের Jun 27, 2025
img
ম্যানচেস্টার সিটির দুরন্ত জয়, জুভেন্টাসকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে পরের রাউন্ডে Jun 27, 2025
img
আকাশেই জীবন অবসান কেবিন ম্যানেজারের Jun 27, 2025
img
ইরানের ইউরেনিয়াম সরানোর প্রমাণ নেই বলল যুক্তরাষ্ট্র Jun 27, 2025
img
জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক রূপ পাচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর Jun 27, 2025
img
১৭ থেকে ২৫ এই জার্নিটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল : তাশরীফ খান Jun 27, 2025
img
টেস্টের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ নিয়ে বিসিবি সভাপতির প্রত্যাশা Jun 27, 2025
img
গায়িকা কনার বিচ্ছেদ নিয়ে সালমার ফেসবুক পোস্ট Jun 27, 2025
img
ভেনিসে বেজোসের রাজকীয় বিয়েতে তারকাদের মেলা Jun 27, 2025