ইরানের হামলা নিয়ে পেন্টাগনের সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন বিভিন্ন বিষয় জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) তারা তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বোমা হামলার প্রস্তুতি, এই দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ নেওয়া মার্কিন ক্রুদের ভূমিকা এবং ইরান কীভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার চেষ্টা করেছিল—সে সম্পর্কে কিছু নতুন তথ্য প্রকাশ করেছেন।
সেখানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘ইতিহাসের সবচেয়ে গোপন ও জটিল সামরিক অভিযান’ পরিচালনা করেছে—যদিও তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি।
সিএেএনের খবরে বলা হয়, এই ব্রিফিংয়ে হামলার পরিকল্পনা নিয়ে কিছু তথ্য দেওয়া হলেও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে নতুন কোনো গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
কেইন ও হেগসেথ বারবার বলেন, এই মূল্যায়নের দায়িত্ব গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর।
তাদের বক্তব্যে ফোকাস ছিল কেবল ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায়। অপর দুটি লক্ষ্য—নাতাঞ্জ ও ইসফাহান—নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। ফোর্দো স্থাপনায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও অস্পষ্ট।
হেগসেথ বলেন, ‘ভেতরের অবস্থা মূল্যায়নে বড় ধরনের খননকাজ দরকার এবং বর্তমানে কেউ সেখানে ঢুকতে পারছে না।’
জেনারেল কেইনও বলেন, ‘জয়েন্ট চিফ দ্বারা ‘ব্যাটলফিল্ড ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্ট’ বা ময়দানে ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা নিজের হোমওয়ার্ক নিজেরা মার্ক করি না। সেই কাজ গোয়েন্দা সংস্থার।’
এদিকে পেন্টাগনের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)-এর প্রাথমিক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরানের মূল পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস হয়নি, বরং কয়েক মাসের জন্য বিলম্বিত হয়েছে। তবে পরে সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ বলেন, এসব স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে এবং সেগুলো পুনর্নির্মাণে কয়েক বছর লাগবে।
হেগসেথ বলেন, সফল হামলা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও পুরোপুরি মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়নি এবং এটি সময়সাপেক্ষ।
এছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবির পেছনে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ এখনও উপস্থাপন করা হয়নি। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে দাবি করেন, হামলার আগে ইরান গোপনে ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেয়নি।
সেখানে যে গাড়িগুলো দেখা গেছে, সেগুলো ছিল কংক্রিট ঢালাইয়ের শ্রমিকদের—তারা টানেলের ওপরের অংশ ঢাকার চেষ্টা করছিল। কিছুই সরানো হয়নি।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র হামলার প্রস্তুতি ও কৌশল নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে, তবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।