চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘অমিক্রন এক্স বিবির’ সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ইতোমধ্যে এ ভাইরাসে ১০০ জনের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬ জনেরও বেশি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার (২৯ জুন) নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে আয়োজিত এক প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে তিনি এ তথ্য জানান।
মেয়র বলেন, এই ভাইরাসটি আগের ডেলটার চেয়ে বেশি শক্তিশালী। অথচ মানুষ এখনও যথাযথভাবে মাস্ক পরছে না, স্যানিটাইজার ব্যবহার করছে না, সামাজিক দূরত্বও মানছে না। এই অবহেলা আমাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। নিয়মিত মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানো—এই কয়েকটি অভ্যাস মানলেই আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি।
মেয়র জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন মাসব্যাপী একটি বিশেষ ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ চালু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো থেকে আনা একটি উন্নতমানের নতুন ওষুধ ব্যবহারে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, এডিস মশা সাধারণত স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়। বাড়ির আশপাশে প্লাস্টিক বোতল, ডাবের খোসা, পলিথিন বা নির্মাণসামগ্রীর কন্টেইনারে জমে থাকা পানি থেকে মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে। এমনকি এক-দুই মিলিলিটার পানিতেও মশা জন্মায়। তাই বাসাবাড়িতে পানি জমে আছে কি না, সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে।
মেয়র জানান, চসিক জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। কোথাও মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমার দায়িত্ব গ্রহণের পর ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে এন্টিজেন পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হচ্ছে। করোনার জন্য আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে, যেখানে রয়েছে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, চিকিৎসক ও নার্স। চসিকের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্রে করোনার র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট, ডেঙ্গুর পূর্ণ রক্ত পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, যারা গত এক বছরে বুস্টার ডোজ নেননি, তাদের এখন বিনা মূল্যে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
মেয়র আরও বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবে আইসিইউ, হাই–ফ্লো অক্সিজেন এবং আরটি–পিসিআর পরীক্ষার সুবিধা রাখা হয়েছে।
শেষে তিনি বলেন, প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো পথ। মাস্ক পরা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত টেস্ট করানো—এই অভ্যাসগুলো আমাদের বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
কেএন/টিকে