দুই কিংবদন্তি নাম, কমল হাসান ও মণি রত্নম। তাদের নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। বিশেষ করে যখন তারা একসঙ্গে কাজ করেন একটি প্যান-ইন্ডিয়া গ্যাংস্টারধর্মী ছবি নিয়ে। ‘থাগ লাইফ’ মুক্তির আগেই তৈরি হয়েছিল তুমুল আলোড়ন। ভক্তদের কাছে এটি হতে পারত বছরের সবচেয়ে বড় ফিল্মিক ইভেন্ট। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এটি রূপ নিয়েছে বছরের অন্যতম হতাশাজনক রিলিজে।
বহুল প্রতীক্ষিত ছবিটি মুক্তির পর বক্স অফিসে চূড়ান্ত ভরাডুবির শিকার হয়। পুরো বিশ্বজুড়ে আয় ১০০ কোটির গণ্ডিও ছুঁতে পারেনি। হিন্দি ভার্সনে আয় মাত্র ২ কোটি টাকার মতো, যার ফলে মূলত উত্তর ভারতের দর্শকপ্রিয়তা পুরোপুরি হারিয়েছে। দ্বিতীয় সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই দেশের বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিনেমাটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
ছবিতে ছিলেন কমল হাসান, শক্তিশালী অভিনয়ে সিলাম্বরাসন, আর নির্দেশনায় ছিলেন মণি রত্নম। ছিল বড় বাজেট, চোখ ধাঁধানো প্রোডাকশন, দুর্দান্ত টেকনিক্যাল দিক। কিন্তু তাতেও দর্শকের মন জয় করা সম্ভব হয়নি।
অনেকেই বলেছেন, “চোখ ধাঁধানো দৃশ্য ছিল, কিন্তু মনের খিদে মেটায়নি।” অর্থাৎ, গল্পের মধ্যে সেই আবেগ বা সংযোগের জায়গা ছিল না যা দর্শক খুঁজে ফেরেন।
এদিকে, আর্থিক ক্ষতি সামাল দিতে গিয়ে মুক্তির মাত্র চার সপ্তাহের মাথায় সিনেমাটি চলে আসে নেটফ্লিক্সে। অথচ ভারতের মাল্টিপ্লেক্স অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ম অনুযায়ী, উত্তর ভারতে থিয়েটার ও ওটিটির মাঝে কমপক্ষে আট সপ্তাহের ব্যবধান থাকা বাধ্যতামূলক।
এই নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে নির্মাতাদের গুনতে হয় ২৫ লাখ টাকার জরিমানা। পাশাপাশি হিন্দি সংস্করণের থিয়েট্রিকাল আয়ের অংশও ছেড়ে দিতে হয়। জানা গেছে, নির্মাতারা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
এই অভিজ্ঞতা নতুন করে প্রমাণ করে দিয়েছে, তারকার উপস্থিতি মানেই সাফল্য নয়। আজকের দর্শক কেবল দৃশ্যমান চাকচিক্য নয়, খোঁজে গল্পের গভীরতা, চরিত্রের সাথে সংযোগ, এবং আবেগের সত্যতা। ‘থাগ লাইফ’-এর ব্যর্থতা আগামী দিনের নির্মাতাদের জন্য এক বড় শিক্ষা হয়ে থাকবে।
এমআর/এসএন