১৯৭৩ সালের পর ডলারের সর্বাধিক পতন, সংকটে যুক্তরাষ্ট্র

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের দরপতন হয়েছে ১০ শতাংশের বেশি, যা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তখন যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণমান থেকে সরে এসেছিল, আর এবার পতনের কারণ ভিন্ন—প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের আগ্রাসী অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নীতিই এই সংকটের মূল কারণ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্ক আরোপ, এককেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি, ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ এবং মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা—সবকিছু মিলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আস্থার ঘাটতি তৈরি করেছে। এতে শেয়ারবাজার ও বন্ডবাজার সাময়িক ইতিবাচক সাড়া দিলেও ডলারের মান পড়েছে ধারাবাহিকভাবে।

ডলারের দরপতনে বিদেশ সফরের খরচ বেড়ে গেছে মার্কিন নাগরিকদের জন্য এবং আমদানির খরচ বাড়ায় চাপ পড়েছে সামগ্রিক অর্থনীতিতে। যদিও দুর্বল ডলার মার্কিন রপ্তানিকারকদের কিছুটা সুবিধা দিয়েছে, কারণ এতে আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন পণ্যের প্রতিযোগিতা বাড়ে।

বিশ্লেষক স্টিভ ইংল্যান্ডার বলেন, “ডলার শক্তিশালী কি না, সেটি মুখ্য নয়। আসল প্রশ্ন হলো, বিশ্ব ডলারের ভূমিকাকে এখন কীভাবে দেখছে।”

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শপথ নেওয়ার সময় ডলার সূচক ছিল সর্বোচ্চ চূড়ায়। কিন্তু এরপর থেকে একাধিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা, বৈদেশিক নীতিতে অনিশ্চয়তা এবং ঋণভারে বিপর্যস্ত অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে ক্রমাগত নিচে নামতে থাকে ডলারের মান।

২ এপ্রিল ট্রাম্পের ঘোষণায় একাধিক দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা হলে মার্কিন বাজারে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতি কেবল ডলারের পতন নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক নেতৃত্বের ওপর গভীর প্রশ্নও তুলে দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই দুর্বলতা হয়তো সাময়িক নয়—বরং এটি হতে পারে একটি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিবর্তনের সূচনা।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

এফপি/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অনুমোদন ছাড়া আমদানিকৃত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা Jul 02, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত স্ট্যাটাস দেয়ায় সহকারী কমিশনার চাকরিচ্যুত Jul 02, 2025
img
২৭১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, এস আলমের সাইফুল-পিকে হালদারসহ আসামি ১৫ Jul 02, 2025
img
বিপিএলের নিলাম অক্টোবরের আগে হবে না : মাহবুব আনাম Jul 02, 2025
img
সীমানা পুনর্নির্ধারণে স্বচ্ছতার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি হবে: জামায়াতের নায়েবে আমির Jul 02, 2025
img
দলীয় প্রতীক শাপলা চেয়ে ইসিতে আবেদন নাগরিক ঐক্যের Jul 02, 2025
img
২৪ ঘন্টায় করোনায় আরও ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৭ Jul 02, 2025
img
শেখ রেহানার স্বামী ও দেবরের ১৫ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ Jul 02, 2025
img
সব কিছুতে ঐকমত্য হয়ে যাওয়াটা বাস্তবসম্মত সম্ভব নয়: জোনায়েদ সাকি Jul 02, 2025
img
নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন শান্ত Jul 02, 2025
img
মিয়ানমারকে হারিয়ে এশিয়ান কাপের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ Jul 02, 2025
img
চট্টগ্রামে ডিআইজি কার্যালয় ঘেরাও করল বৈষম্যবিরোধীরা Jul 02, 2025
img
ঋতুপর্ণার জোড়া গোল, জয়ের আরও কাছে বাংলাদেশ Jul 02, 2025
img
‘হাতপাখার সমাবেশ’ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ : ফারুক Jul 02, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনায় নৌবাহিনীর সঙ্গে চুক্তির পরিকল্পনা Jul 02, 2025
img
প্রাক্তনকে ভুলে এবার বীরের সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু তারা সুতারিয়ার Jul 02, 2025
img
শেফালির মৃত্যুর পরও ৭৭ বছর বয়সেও ফিলারে ভরসা মুমতাজের Jul 02, 2025
img
নতুন মামলায় গ্রেফতার আনিসুল-সালমান-দীপু মনি Jul 02, 2025
img
ইভিএম ক্রয়ে অনিয়ম: ইসির সাবেক তিন কর্মকর্তাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ Jul 02, 2025
img
আমি ফাতিমার বাবা নই, না বয়ফ্রেন্ড : আমির খান Jul 02, 2025