এক বছরেই মানুষ বিরক্ত, অনেকের মুখোশ খুলে গেছে : গোলাম মাওলা রনি

সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, গত এক বছরে আমরা বিরক্ত হয়ে গেছি। এখন নতুন দরবেশ দেখছি, নতুন চাঁদাবাজ, নতুন জালেম দেখছি। অনেক মানুষের মুখোশ খুলে গেছে। তিনি বলেন, যারা গত ১৫ বছর হাউমাউ করে কেঁদেছেন, আমরা তাদের জন্য দোয়া করেছি যে, লোকটা ভালো মানুষ।

সেই মানুষগুলো এই অল্প কয়েকদিনে ফেরেশতার ভাবমূর্তি থেকে দানবের আকৃতি নিয়েছেন। তারা গত ১৫ বছরে দানবের যে তাণ্ডব ছিল সেটা ১৫ দিনের তাণ্ডব দিয়ে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন।

পৃথিবীতে যত বিপ্লব ব্যর্থ হয়েছে, বিপ্লবীদের দ্বারাই ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আমাদের দেশের এটাকে আমরা এখন বিপ্লব বলতে পারছি না। কারণ একটা বিপ্লব দীর্ঘদিন ধরে নেতা নির্বাচন করে।

যুদ্ধ করে, বিপ্লবকে জনপ্রিয় করে। কিন্তু বাংলাদেশের এটা ছিল গণবিস্ফোরণের মতো ঘটনা এবং সেই গণবিস্ফোরণে পুরো জনগণ যে যার অবস্থান থেকে অংশ নিয়েছে। জুলাই-আগস্টের উত্তাল সময়ে গৃহবধূ রাস্তায় নেমে এসেছে, সাত থেকে আট বছরের একটা শিশুও রাস্তায় নেমে এসে একটা ঢিল ছুড়েছে।

জুলাই আন্দোলন নিয়ে কৃতিত্বের লড়াই, মাস্টারমাইন্ড কে? সেটি নিয়ে বিতর্ক করাটা মারাত্মক ভুল হয়েছে উল্লেখ করে গোলাম মাওলা রনি বলেন, যারা সম্মুখ নেতা ছিলেন তারা যদি এই বিপ্লবের কৃতিত্ব জনগণকে দিতেন এবং দীর্ঘ সময় যারা এই দেশকে পরিচালনা করতে পারেন তাদের হাতে বিপ্লবের ফলাফল তুলে দিতেন তবে আওয়ামী লীগের বিচার আরো সুন্দর হতো।

এখন যেভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আছে সেটা শতগুণ ভালো থাকতো। বিপ্লবীদের সম্পর্কে এখন যেসব মন্দ কথা হচ্ছে সেটাও হতো না।

তিনি বলেন, আজকের এই দিনে আমি ভেবেছিলাম ঢাকার রাজপথ উত্তাল থাকবে, সমস্ত মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে কিন্তু কোথাও তার ছিটেফোঁটাও নেই। সকালে (১ জুলাই) যখন বের হয়েছি, ভেবেছিলাম শাহবাগ অতিক্রম করতে পারব না। কিন্তু সকাল ১১টায় সেখানে একটা মানুষ, একটা ব্যানার বা ফেস্টুন ছিল না।

এত বড় একটা সংগ্রাম, এত বড় একটা লড়াই, এত রক্ত মাত্র এক বছরেই আমরা শুধু ভুলতেই বসিনি, আমরা বিরক্ত হয়ে গেছি। এখন নতুন দরবেশ দেখছি, নতুন চাঁদাবাজ, নতুন জালেম দেখছি। গত ১৫ বছর যারা জুলুমের শিকার হয়েছেন, যাদের দেখে আমাদের করুণা হতো, আমরা দোয়া করতাম, সেই মানুষগুলো এই অল্প কয়েকদিনে ফেরেশতার ভাবমূর্তি থেকে দানবের আকৃতি নিয়েছেন। তারা গত ১৫ বছরে দানবের যে তাণ্ডব ছিল সেটা ১৫ দিনের তাণ্ডব দিয়ে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ব্যাটিং বিপর্যয়ে বিসিবি সভাপতির হতাশা, দায় দেখছেন মানসিকতায় Jul 04, 2025
img
ইরানের সঙ্গে সংঘাত কেবল কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা উচিত, ট্রাম্পকে বললেন পুতিন Jul 04, 2025
img
মূল লক্ষ্য থেকে পিছু হটবে না মস্কো, ট্রাম্পকে বললেন পুতিন Jul 04, 2025
img
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ: গোলাম পরওয়ার Jul 04, 2025
img
ঋতুপর্ণা হলেন বাংলাদেশের মেসি, বললেন বাফুফে কর্মকর্তা Jul 04, 2025
img
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে : গভর্নর Jul 04, 2025
img
ইতিহাসে প্রথমবার, ৩৫টি ভাষায় সরাসরি অনুবাদ হবে মক্কায় জুমার খুতবা Jul 04, 2025
img
ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুখবর Jul 04, 2025
img
মাল্টা ও লিবিয়া উপকূলে অভিযান, উদ্ধার ১১৭ অভিবাসী Jul 04, 2025
img
বনানীর জাকারিয়া হোটেল হামলা: অভিযুক্তরা শনাক্ত, গ্রেফতারে চলছে পুলিশের অভিযান Jul 04, 2025
img
পিআর চায় অযোগ্যরা, ব্যালট চায় জনগণ : আমিনুল হক Jul 04, 2025
img
ভালুকের আক্রমণে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের Jul 04, 2025
img
বিয়ের আগের দিন ক্যাম্পাসে এসে আটক জবি ছাত্রলীগ নেতা Jul 04, 2025
img
রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ‘সাকিব ও মাশরাফির মতো আমারও ভুল হয়েছে’ Jul 04, 2025
img
দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজগুলো বাদ দেওয়ার আহ্বান ক্লাসেনের Jul 03, 2025
img
এইচএসসি পরীক্ষায় নকল করায় একই কলেজের ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার Jul 03, 2025
img
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড পঞ্চাশ বছরেও কোনো সরকার বন্ধ করতে পারে নাই : নাহিদ ইসলাম Jul 03, 2025
img
পনেরো বছর পর গানে ফিরলেন শঙ্কর চক্রবর্তী Jul 03, 2025
img
‘বর্ডার ২’ করলেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত দিলজিতের Jul 03, 2025
স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার পরও বৈবাহিক সম্পর্ক;শ্রীঘরে মানবাধিকার কর্মী Jul 03, 2025