সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে না পারা : শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মিথ্যা অপবাদ ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে গত ১৪ বছর জুলুম করা হয়েছে। এজন্য এ রাষ্ট্রকে, এ দেশকে এটিএম আজহারুল ইসলামসহ প্রত্যেক মজলুমের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। প্রত্যেক মজলুমদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগরী ও জেলা শাখা আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, এখন পর্যন্ত জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র দিতে পারেন নাই, এর চেয়ে বড় ব্যর্থতা এ সরকারের আর কী হতে পারে। আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ বলতে চাই না। কিন্তু তারা তাদের উদাসীনতা তাদের অযোগ্যতার কারণে জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে পারেন নাই। সরকারকে বলতে চাই আপনারা স্বাভাবিক কোনো প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন নাই, আপনারা শত শত ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন।

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, এখনো অনেকে আমাদের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রক্ত চক্ষুর মাধ্যমে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো দুনিয়ার শক্তিকে ভয় পাই না। বর্তমান সময়ে কেউ কেউ নিজেদের প্রধান দল, ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আত্মপরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ মানুষ ঠিক করবে কে ক্ষমতায় যাবে কারা প্রধান দল হবে।

তিনি আরও বলেন, অতীতে রংপুরের মানুষকে ব্যবহার করে রংপুরের মানুষের আত্মত্যাগকে ব্যবহার করে ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নিজে অট্টালিকার পাহাড় গড়েছে। উন্নয়ন আমরা দেখি নাই। আমরা দাবি করছি এখানে যারা উপস্থিত আছেন আগামীদিনে রংপুরকে নেতৃত্ব দেবেন, রংপুরের উন্নয়নের জন্য আপনাদের অগ্রণী ভূমিকা ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি উত্তরের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে যথাযথ কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

শিবির সভাপতি বলেন, আমরা কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় পাই না। আমরা শহীদ আবু সাঈদের প্রজন্ম। আমরা আমাদের এই হাত দিয়ে অসংখ্য শহীদদের দাফন করেছি। অসংখ্য শহীদের রক্ত এখনো আমাদের কাপড়ে শরীরে লেগে আছে। এজন্য আমাদের ভয় দেখাতে আসবেন না। যারা আগামীতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন এই যুবসমাজের ছাত্রসমাজের সাইকোলজিকে বোঝার চেষ্টা করবেন।

এজন্য আপনাদের বিপ্লবের চেতনা ধারন করে অবিলম্বে আবু সাঈদসহ শহীদদের সব গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করতে হবে। অনতিবিলম্বে জুলাই আগস্টের স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ ও আহতদের স্বীকৃতি দিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে।

জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির আজম খান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন— বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।

এছাড়া জনসভায় শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী, ইসলামী আন্দোলন রংপুর মহানগরের সভাপতি আব্দুর রহমান কাশেমী, গণঅধিকার পরিষদ জেলা আহ্বায়ক শেরে খোদা আসাদুল্লাহ, হিন্দু ধর্মাবলম্বী যোগেন চন্দ্র বর্মনসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর রংপুরে আয়োজিত এ জনসভা বিকেল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জুমার নামাজের পরই জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠ। লোকসমাগম মাঠ ছেড়ে উপচে পড়ে সড়কে। জনসভা থেকে আগামী নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

এফপি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জুলাইয়ে শহীদ হতে না পারাটা আমার জন্য আফসোস: আসিফ মাহমুদ Jul 05, 2025
img
মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে আটক তিনজন দেশে ফিরেছেন, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে : আসিফ নজরুল Jul 05, 2025
img
সকালের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 05, 2025
img
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে : নাহিদ ইসলাম Jul 05, 2025
img
এনসিপির কর্মসূচি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে একটি নতুন রাজনীতির সূচনা: প্রেস সচিব Jul 05, 2025
img
সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করলে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে: আখতার Jul 05, 2025
img
এজবাস্টনে বড় লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করল ভারত, চাপে ইংল্যান্ড Jul 05, 2025
img
৬ ঘণ্টা পর খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক Jul 05, 2025
img
মুন্সীগঞ্জে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর Jul 05, 2025
img
হাসারাঙ্গাকে সামলানোর নতুন কৌশল খুঁজে পেল বাংলাদেশ! Jul 05, 2025
img
সংস্কার শেষে এই সংবিধানের অধীনেই দেশ চলবে: রিজভী Jul 04, 2025
img
আওয়ামী লীগ শুধু হিন্দুদের ব্যবহার করেছে মাত্র: আযম খান Jul 04, 2025
img
আগস্টে তুরস্কের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ নারী দল! Jul 04, 2025
img
ধূমপানের দৃশ্য নয়, নীতির কাছে আপসহীন অভিনেত্রী রাশমিকা! Jul 04, 2025
img
খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক তুলে নিল রাজস্ব বোর্ড Jul 04, 2025
img
বিএনপি জনগণের রাজনীতি করে, ক্ষমতার রাজনীতি করে না: ওবায়দুর রহমান চন্দন Jul 04, 2025
img
‘রামায়ণ’ হতে যাচ্ছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমা Jul 04, 2025
img
দেশে টানা ৫ দিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস Jul 04, 2025
১০ মিনিটে সারাদিনের দেশের আলোচিত সব খবর Jul 04, 2025
img
সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে না পারা : শিবির সভাপতি Jul 04, 2025