একসময়ে 'কেদারনাথ' ও 'সিম্বা' দিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরুতেই আশার আলো দেখিয়েছিলেন সারা আলি খান। তার ব্যক্তিত্ব, স্টার কিড তকমা আর মিডিয়া আকর্ষণ, সব মিলিয়ে মনে হয়েছিল, নতুন প্রজন্মের শক্তিশালী মুখ হয়ে উঠবেন তিনি। কিন্তু সেই সম্ভাবনার পথচলা খুব একটা মসৃণ হয়নি।
পরপর কয়েকটি সিনেমার ব্যর্থতা, অভিনয়ে ধারাবাহিকতা না থাকা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিং, সব মিলিয়ে গ্ল্যামার আর তারকাখ্যাতি সত্ত্বেও ক্যারিয়ারে নেমে এসেছে ধোঁয়াটে অন্ধকার।
এবার সেই অন্ধকার সরাতে তিনি ভরসা রেখেছেন অনুরাগ বসুর নতুন ছবি মেট্রো ইন দিনো-র ওপর। এটি কেবল আরেকটি সিনেমা নয়, বরং সারার পেশাগত ইমেজকে নতুন করে গড়ে তোলার একটি বড় সুযোগ।
অনুরাগ বসু এমন একজন পরিচালক, যিনি লাইফ ইন আ মেট্রো, বরফি! কিংবা লুডো দিয়ে প্রমাণ করেছেন, চরিত্রনির্ভর, সংলাপ-নির্ভর, হৃদয়স্পর্শী গল্প বলার দক্ষতা তার ভীষণই স্পষ্ট। ফলে সারার মতো একজন অভিনেত্রীর জন্য যিনি অভিনয়ের থেকে বেশি নজর কেড়েছেন পারিবারিক পরিচিতি ও মিডিয়া হাইপের কারণে, এই ছবিটি হতে পারে নিজেকে প্রমাণ করার শ্রেষ্ঠ মঞ্চ।
সারার সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র যাত্রা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—
২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জারা হাটকে যারা বাঁচকে সিনেমায় সহ-অভিনেতা ছিলেন ভিকি কৌশল। ছবিটি হিট করে, আর সেখানে সাধারণ এক চরিত্রে সারার অভিনয়ে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার হয়। তবে একই বছরের ওটিটি রিলিজ গ্যাসলাইট দর্শকের মন জয় করতে পারেনি। চেষ্টার প্রশংসা মিললেও দুর্বল কাহিনির কারণে ছবিটি ডুবে যায়।
২০২৪ সালে মার্ডার মুবারক নামক নেটফ্লিক্সের একটি বহুল আলোচিত প্রজেক্টেও দেখা যায় সারাকে, কিন্তু বড় কাস্ট থাকা সত্ত্বেও সিনেমাটি হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ হয়।
২০২৫ সালের স্কাই ফোর্স এ তার উপস্থিতি সীমিত, যেখানে দেশাত্মবোধক আবহে তিনি খুব বেশি প্রভাব রাখতে পারেননি।
তার আগে, ২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লাভ আজ কাল, এ তার অভিনয় নিয়ে ব্যাপক হাস্যরস ও ট্রোলের সৃষ্টি হয়, যা আজও তার ক্যারিয়ারের বড় একটি নেতিবাচক অধ্যায় হিসেবে থেকে গেছে।
এখন সারার সামনে একটাই প্রশ্ন, এই ছবি কি ফিরিয়ে আনবে সেই পুরনো ঝলক, নাকি হতাশার তালিকায় যোগ হবে আরও একটি নাম?
তার রয়েছে স্টার পাওয়ার, মিডিয়ার নজর, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ, তবে অনুপস্থিত ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্স।
এই অবস্থায় ‘মেট্রো ইন দিনো’, এর চিত্রনাট্য এবং পরিচালনার শক্ত ভিত্তি যদি সারার প্রতি সুবিচার করতে পারে, তাহলে হয়তো তিনি আবার দর্শকের বিশ্বাস ফিরে পেতে পারেন।
এই ছবিটি হতে পারে তার ‘ইমেজ রিসেট’। এটি শুধুই একটি নতুন রিলিজ নয়, বরং তার ক্যারিয়ারের এক সন্ধিক্ষণ, যেখানে তিনি আবারও প্রমাণ করতে পারেন, শুধু স্টার কিড নন, তিনি নিজ গুণেও বলিউডে নিজের জায়গা করে নিতে পারেন।
এমআর