পৃথিবীর পুরাতন ইতিহাস যেন আজও নিজের অজানা অধ্যায় খুলে ধরছে মানুষের সামনে। এবার এমনই এক চমকপ্রদ আবিষ্কারের কথা জানালেন পেরুর প্রত্নতাত্ত্বিকরা। দেশের উত্তরাঞ্চলীয় বারানকা প্রদেশে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন শহর ‘পেনিকো’, যার বয়স প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর। গবেষকদের মতে, এটি শুধু একটি সভ্যতার নিদর্শন নয়, বরং তখনকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় জনগোষ্ঠী, আন্দিজ পর্বতমালা এবং আমাজন অববাহিকার মধ্যে সংযোগের অন্যতম সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করত।
পেনিকো শহরটি অবস্থিত লিমা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তরে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার উচ্চতায়। অনুমান করা হচ্ছে, এই নগরী গড়ে উঠেছিল ১৮০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, যে সময় বিশ্বজুড়ে নানা অঞ্চলে প্রাথমিক সভ্যতাগুলোর বিকাশ ঘটছিল।
ড্রোন ফুটেজ ও দীর্ঘ আট বছরের গবেষণার পর শহরটির অন্তত ১৮টি স্থাপনার চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মন্দির, আবাসিক ভবন এবং একটি কেন্দ্রীয় বৃত্তাকার কাঠামো যা পাহাড়ের ধারে অবস্থিত। প্রত্নতাত্ত্বিকরা এখানে পেয়েছেন মানুষ ও প্রাণীর মূর্তি খচিত মাটির ভাস্কর্য, পুঁতি, এবং সমুদ্রের খোলসে গড়া প্রাচীন অলঙ্কার।
সংবাদ সম্মেলনে পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদ মার্কো মাচাকুয়ে জানান, এই আবিষ্কারের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেন, “পেনিকোর তাৎপর্য এটাই যে, এটি ক্যারাল সমাজের ধারাবাহিকতাকে বহন করছে।”
পেনু বরাবরই ছিল ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই দেশে অবস্থিত মাচু পিচুর ইনকা দুর্গ কিংবা নাজকা মরুভূমিতে খোদাই করা রহস্যময় রেখা, সবই ইতিহাসের জগতে পেরুর এক অসামান্য অবস্থান তৈরি করেছে।
এই নতুন আবিষ্কার শুধু অতীতের একটি দরজা নয়, বরং মানব সভ্যতার এক প্রাচীন পালার পাতায় লেখা এক রোমাঞ্চকর অনুচ্ছেদ।
সূত্র-বিবিসি