কথায় আছে মেয়েরা বড় হলে মায়েদের বন্ধু হয়ে যায়। অভিনেত্রী জয় আহসানের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। মায়ের গান এখনও নায়িকার কানে বাজে।
কলকাতায় ভারতীয় যাদুঘরের যে দিকে চোখ যায় চারিদিক শুধুই সাদা। দেওয়াল থেকে থাম— সবটাই সাদা রঙে মোড়ানো। সাদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সোমবার ‘ডিয়ার মা’ ছবির সব সদস্যরা সেজেছিলেন কালো পোশাকে।
এক কথায় বলা যেতে পারে সাদা-কালো ‘থিম’। জয়া আহসান থেকে সঙ্গীত পরিচালক বিক্রম ঘোষ— প্রত্যেকের পোশাকেই ছিল কালোর রঙের ছোঁয়া। শুধুমাত্র ছবির প্রচারের জন্য আমেরিকা থেকে এসেছিলেন শিল্পী ব্যারি ফিলিপ। ভারতীয় যাদুঘরে ছবির সব গানের লাইভ পারফরম্যান্সের আয়োজন করা হয়েছিল। উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের যুগলবন্দি থেকে শিশু সঙ্গীতশিল্পী তিন্নি— একে একে সকলের গানে মুগ্ধ উপস্থিত সকলে। গান শুনতে শুনতে নিজের ছোটবেলায় ডুব দিলেন জয়া।
ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে তাঁর গানের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ঘুম পাড়ানি গান থেকে সঙ্গীতের তালিম— সবই মায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন অভিনেত্রী। আনন্দবাজার ডট কমকে তিনি বললেন, “মা-আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক। যাঁর কাছে আমি গান, নাচ দুই-ই শিখেছি। আজ এই অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে মায়ের কাছে প্রথম শোনা ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে’ গানটির কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল।” জয়া যোগ করলেন, “বাবা টেবিল ঠুকে তবলা বাজাতেন। আর মা গাইতেন। আমায় একটা নুপূর কিনে দিয়েছিলেন। সারা ক্ষণ ওটা পরে আমি নাচতাম। এত বছরের অভিনয় জীবনে বহু গুণী মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। কিন্তু তা-ও মনে হয় মা-ই শ্রেষ্ঠ শিল্পী।”
এই ডিজিটাল যুগে হাতের মুঠোয় একের পর এক গুণী শিল্পীদের গান। কিন্তু কিছু কাল আগে পর্যন্ত সেই সুযোগ ছিল না। প্রিয় শিল্পীর গান শুনতে হলে ক্যাসেট কিনতে হত। ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ব্যবহৃত হত টার্ন টেবিল। ‘ডিয়ার মা’ ছবির মাধ্যমে সেই পুরনো টার্ন টেবিল, ভিনাইল ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। সঙ্গীত পরিচালক বিক্রম ঘোষ বললেন, “ইউরোপে ভিনাইল-এর বড় পরিসর রয়েছে।
এটা এখানেও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এই ডিজিটাল যুগে একটা দিনে প্রায় তিন লক্ষ গান বেরোচ্ছে গোটা বিশ্বে। সেখানে একটা গান কী ভাবে শ্রোতাদের মনে গেঁথে থাকবে! সিনেমায় লিপে গান চলে গিয়েছে এখন। প্রচারের মাধ্যম হিসাবে গান বেছে নেওয়া হচ্ছে। এটার পরিবর্তন আসার এ বার দরকার।”
এমকে/টিএ