পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের পর এবার জম্মু–কাশ্মীরের চেনাব নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ভারত। এরইমধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক ও দাতা গোষ্ঠীর কাছে তিন হাজার কোটি রুপি ঋণ খুঁজছে মোদি সরকার। ভারতের এমন পরিকল্পনার নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় তিনটি নদীর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছিল। কিন্তু এপ্রিলের শেষদিকে কাশ্মীরের পহেলগামে হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর নয়াদিল্লি একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে। সিন্ধু পানিচুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে মতবিরোধের মধ্যেই এবার জম্মু–কাশ্মীরের চেনাব নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করতে চায় ভারত।
চেনাব নদীর ওপর নতুন গ্রিনফিল্ড বাঁধ নির্মাণে ৩ হাজার কোটি রুপি ঋণ নিতে চাইছে ভারত। গণমাধ্যমের খবর, বিভিন্ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর কাছে এরইমধ্যে ঋণের বিষয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। ভারত সরকার চাইছে ২০২৭ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে।
তবে এই বাঁধ নির্মাণ হলে বিপাকে পড়বে পাকিস্তান। বাঁধের কারণে দেশটিতে পানিপ্রবাহ আরও কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আসিয়ান সম্মেলনে আঞ্চলিক শান্তি ও সহাবস্থান বজায় রাখতে পাকিস্তান সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, আলোচনায় বসতে অনীহা প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি।
এদিকে জাতিসংঘের ২০২৬ পানি সম্মেলনের প্রস্তুতি সভায় পাকিস্তান আবারও অভিযোগ করেছে, সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে ভারত পানিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিলের কারণে ২২ কোটিরও বেশি মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তি অনুযায়ী পশ্চিমাঞ্চলের নদীর পানিতে পাকিস্তানের হিস্যা আছে। একইভাবে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতেরও সীমিত অধিকার রয়েছে। সেই সুযোগই সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাচ্ছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের দাবি, পেহেলগামে হামলার পর ভারত পানিচুক্তি স্থগিত করে যে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে, চেনাব প্রকল্প তারই অংশ।
এমআর/টিকে