আষাঢ়ের কালো মেঘে ঢাকা বিকেল। পুরীর জগন্নাথ মন্দির চত্বরে তখন উপচে পড়ছে ভক্তের ঢল। তারই মধ্যে ভিড় চিরে এসে দাঁড়ায় দুটি অটো। একে একে নামলেন সাদা সালোয়ারে মুখ ঢাকা শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ফুলছাপা জামায় ইশা সাহা, পাশে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় ও পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। মন্দিরে ঢোকার আগে কারও মুখে মেকআপ নেই, নেই তারকাসুলভ গ্ল্যামার—এ যেন একান্ত ভক্তির রূপে আত্মমগ্ন এক টিম।
‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবির শুটিংয়ে এসে সময় বের করে এই আরাধনায় মাতলেন তারকারা। এ দিনই প্রথম পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে এলেন ইশা ও ইন্দ্রনীল। সকালেও পরিকল্পনায় মন্দির দর্শন ছিল না। কিন্তু আচমকা শুটিং বাতিল হতেই সবাই হাজির জগন্নাথ ধামে। সঙ্গে ছিলেন ছবির প্রযোজক রানা সরকার, যিনি মন্দির ইতিহাস ও দেবতার মাহাত্ম্য শোনালেন গদগদ ভক্তির সঙ্গে।
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় জানালেন তিনি শিবভক্ত। তাঁর অনুরোধেই মন্দিরে ঢুকে প্রথমে গেলেন শিবমন্দিরে। মাথায় জল ঢেলে শিব আরাধনা সারলেন ইশা, ইন্দ্রনীল, সুস্মিতা। এরপর একে একে ঢুকলেন মূল মন্দিরে, করলেন জগন্নাথ দর্শন। ভক্তিভরে মাথা নত করলেন সবাই।
মন্দির থেকে বেরিয়ে হল ধ্বজা গ্রহণ। ঘিয়ে ভেজানো প্রদীপ জ্বালিয়ে একান্ত প্রার্থনায় মগ্ন হলেন তারকারা। শুভশ্রী জানালেন, পুরীতে তিনি বহুবার এসেছেন। তবে প্রতিবারই যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা। ছোট এক শিশুকে ভিড়ের মধ্য থেকে কোলে তুলে বসিয়ে দিলেন নিজের পাশে, যেন জনতার মধ্যে নিজেকেই খুঁজে পেলেন ‘ইয়ালিনি’র মা।
শেষে এল ভোগ খাওয়ার পালা। কারও মুখে ডায়েটের কথা নেই, রসনাতৃপ্তিতে চেটেপুটে খেলেন সরের পায়েস, ঘিয়ের মালপোয়া। পরিকল্পনাও করে ফেললেন, কলকাতায় ফিরেও এই ভোগ নিয়ে যাবেন।
মন্দিরের চত্বর থেকে বেরিয়ে ইন্দ্রনীল বললেন, “এই রথেই কি আমাদের শুটিং হবে?” ইশা হেসে উত্তর দিলেন, “এই ছবিতে আমার যে কত বড় বড় সংলাপ!” পাশে দাঁড়িয়ে সুস্মিতা টিপ্পনী কাটলেন, “তুমি তো আঁতেল পরিচালক, সংলাপ না হলে চলবে?”
জগন্নাথ দর্শনের অভিজ্ঞতা যে শুধু একদিনের যাত্রা নয়, বরং একান্ত অন্তরের অনুভব, তা যেন স্পষ্ট হয়ে উঠল শুভশ্রী-ইশা-ইন্দ্রনীলদের চোখেমুখে।
এসএন